বিদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নজরদারি এবং রিপোর্ট করার দায়িত্বে থাকা মার্কিন একটি সরকারি সংস্থা ভারতের কর্ণাটকে হিজাব নিষিদ্ধ করার সমালোচনা করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার অনুমতির দাবিতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ের মধ্যে মন্তব্যটি এলো। প্রতিক্রিয়ায় ভারত বিষয়টি ‘আদালতের বিবেচনাধীন’ ও ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডমের (আইআরএফ) অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ রাশেদ হোসেন কর্ণাটক সরকারের সমালোচনা করেছেন।
রাশেদ হোসেন এক টুইটে লেখেন, বিদ্যালয়ে হিজাব নিষিদ্ধ করা ধর্মীয় স্বাধীনতার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বারাক ওবামা মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন রাশেদ হোসেন।
টুইটে রাশেদ আরো লিখেছেন, ধর্মীয় স্বাধীনতার মধ্যে ব্যক্তির ধর্মীয় পোশাক বেছে নেওয়ার ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত। ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে ধর্মীয় পোশাক নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত হয়নি। বিদ্যালয়ে হিজাব নিষিদ্ধ করা ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন। এতে নারী ও মেয়েদের চিহ্নিত ও প্রান্তিক করে তোলা হয়।
অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ রাশেদ হোসেনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভারত আজ বলেছে, ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে উদ্দেশ্যমূলক মন্তব্যকে স্বাগত জানানো হবে না। ‘ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘যাঁরা ভারত সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন, তাঁরা যথাযথ বাস্তবতা উপলব্ধি করবেন। ‘
অরিন্দম বাগচি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কর্ণাটক রাজ্যের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পোশাক বিধিসংক্রান্ত বিষয়টি রাজ্যের হাইকোর্টের বিবেচনাধীন’। তিনি বলেন, ‘ভারতের সাংবিধানিক কাঠামো ও প্রক্রিয়ার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক নীতি এবং রাজনৈতিকভাবে এসব সমস্যা বিবেচনা খতিয়ে দেখে সমাধান করা হয়। ‘
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে কর্ণাটকের একটি সরকারি কলেজের কয়েকজন মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেন, ‘তারা হিজাব পরে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারলেও শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে পারবে না। ‘ হিজাব পরা শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। বিষয়টি কর্ণাটকের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী পাল্টা গেরুয়া ওড়না পরে হিজাব পরার বিরোধিতা করলে উত্তেজনাও ছড়ায়। এ পরিস্থিতিতে রাজ্যে তিন দিন শিক্ষায়তন বন্ধ ঘোষণা করা হয়।