দীর্ঘ সাত বছর পরে দেশ দুটি আবার কূটনৈতিক সম্পর্কস্থাপনে রাজি হয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় রাজধানী বেইজিংয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকের পর সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে আবার সম্পর্ক স্থাপনে একমত হয়।
কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং দূতাবাস পুনরায় খোলার বিষয়ে একমত হয়েছে ইরান ও সৌদি আরব। গত শুক্রবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বৈঠকের পর এ বিষয়ে একমত হয় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, বৈঠকের ফলে দুই মাসের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং দূতাবাস পুনরায় খোলার বিষয়ে সম্মত হয়েছে ইরান ও সৌদি আরব।
বিবিসির একজন সংবাদদাতা ফ্র্যাংক গার্ডনার জানিয়েছেন, বেইজিংয়ে মাত্র চারদিনের এক সমঝোতা আলোচনায় গত সাত বছরের হিমশীতল কূটনৈতিক সম্পর্কের বরফ গলানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে চীন সরকার।
জাতিসংঘ মহাসচিব হতে শুরু করে বিশ্বনেতারা বিবৃতি দিয়ে এই সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে ব্যতিক্রম ছিল দুটি দেশের প্রতিক্রিয়া—যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও সৌদি আরবের দ্বন্দ্বের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হিসেবে দেখা হয় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বহু দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে তার ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ বজায় রাখতে পেরেছে, সে ক্ষেত্রে ইরান-সৌদি দ্বন্দ্ব মারাত্মকভাবে সহায়ক হয়েছে।
ওয়াশিংটন যে কারণে অস্বস্তিতে
বেইজিং থেকে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সমঝোতার খবর যখন প্রথম এলো, সেটি ওয়াশিংটনে একই সঙ্গে বিস্ময় এবং শঙ্কা তৈরি করে। এর মূল কারণ অবশ্য ইরান-সৌদি আরব সমঝোতা নয়, তাদের অস্বস্তি ও শঙ্কার মূল কারণ এই সমঝোতায় চীন যে ভূমিকা পালন করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে বহু দশক ধরে সব ধরনের সংঘাতে রেফারির ভূমিকায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এখন তাদের সেই প্রভাব বলয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যেভাবে চীন ঢুকে পড়ছে—সেটি মার্কিন নীতিনির্ধারকদের জন্য সাংঘাতিক শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।