কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ ! হতাহত অজানা

সদ্য পাওয়া খবরে জানা যায়, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে। শোনা যায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ! হতাহতের তথ্য এখনও জানা যায়নি৷
এর আগে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই সতর্কতা জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলো৷
বিমানবন্দরের অ্যাবি গেট যেখানে মার্কিন এবং ব্রিটিশ সৈন্যরা অবস্থান নিয়ে হাজার হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল তার ঠিক বাইরে এই বিস্ফোরণ ঘটে।
পেন্টাগনের একজন মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, বিস্ফোরণের পর হতাহতের সংখ্যাটি পরিষ্কার নয়। তবে মি. কারবি স্বীকার করেছেন যে বেশ ক‌জন এতে নিহত হয়েছে।
তবে তালেবান দাবি করছে, বিস্ফোরণে অন্তত ১১ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে বলে তালেবানের একজন কর্মকর্তা বলছেন। অকুস্থল থেকে আহত ব্যক্তিদের সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। এই ঘটনার সময় গোলাগুলির শব্দও শোনা গেছে।
তবে এই হামলা কে চালাতে পারে সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাচ্ছে না। ব্রিটেনের সশস্ত্র-বাহিনী বিভাগের উপমন্ত্রী জেমস হিপি বিবিসিকে শুধু এটুকুই বলেছেন যে এই হুমকি প্রবল, এবং এর ফলে সময়মত হয়তো সবাইকে কাবুল থেকে বের করে আনা সম্ভব নাও হতে পারে।
আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর সাবেক অধিনায়ক কর্নেল রিচার্ড কেম্প বলছেন, কাবুলে যেদিন থেকে মানুষজনকে সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই হামলার হুমকি তৈরি হয়েছে।
“সন্ত্রাসী হামলার হুমকি এটা যে কারো কাছ থেকে আসতে পারে – তালেবান, ইসলামিক স্টেট কিংবা আল কায়দা। এদের যে কোনটির কাছ থেকেই আক্রমণ আসতে পারে।”
তালেবানের চেয়ে বহুগুণ বেশি কট্টরপন্থী এই আইএসকেপি গোষ্ঠী। তারা আফগানিস্নতানের তালেবানকে শত্রু বলে মনে করে। তালেবানের ওপর হামলাকে মনে করে ‘জায়েজ’।

কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে যে গোষ্ঠীটির নাম রাজনীতিক এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মুখে মুখে ফিরছে সেটি হলো তথাকথিত ইসলামিক স্টেট অফ খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি)। এর সদস্যরা এরই মধ্যে কাবুলে অনুপ্রবেশ করেছে বলে খবর দিচ্ছে বিবিসি সহ আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা গুলো।

আইএসকেপি কারা ?

আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী যে নাম ব্যবহার করে তা হলো ইসলামিক স্টেট অফ খোরাসান প্রভিন্স। এখানে খোরাসান শব্দটি এসেছে আধুনিক আফগানিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ে যে অঞ্চল তার প্রাচীন নাম থেকে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত ২৪ অগাস্ট সরাসরিভাবে বলেন যে আইএসকেপি কাবুল বিমানবন্দরে হানা দিতে পারে।

আইএসকেপি গোষ্ঠীর জন্ম ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে। মূলত পাকিস্তানি তালেবান এবং আফগান তালেবানের সাবেক সদস্যদের নিয়ে এই গোষ্ঠী তৈরি হয়। আফগানিস্তানের তালেবানের চেয়ে আইএসকেপি বহুগুণ বেশি কট্টরপন্থী। তারা আফগান তালেবানকে শত্রু বলে মনে করে। ইসলামী বিধানের তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী মনে করে যে ‘মুরতাদ’ হিসেবে তালেবানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো ‘জায়েজ’ (বৈধ/আইনসিদ্ধ)।

গত বছর ২৯শে ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র এবং আফগানিস্তানের তালেবানের মধ্যে যে শান্তি চুক্তি হয় আইএসকেপি তার নিন্দা জানায় এবং বলে যে তারা আফগানিস্তানে তাদের লড়াই অব্যাহত রাখবে।

এই গোষ্ঠী একই সঙ্গে তালেবানের আফগানিস্তান দখলকে নাকচ করে দিয়ে দাবি করে যে এক গোপন চুক্তির অংশ হিসেবে আমেরিকানরা আফগানিস্তানকে তালেবানের হাতে তুলে দিয়েছে।

সূত্র
বিবিসি/ ডিডব্লিউ

অনলাইন ডেস্ক

সংবাদটি এবং সংযুক্ত মিডিয়া (ছবি-ভিডিও-গ্রাফ) বিভিন্ন দেশীয় অথবা আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা হতে সংগ্রহীত অথবা অনুবাদকৃত। এর কোন কৃতিত্ব অথবা কপিরাইট আমাদের নয়।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button