অলিম্পিক গেমসের টুকরো ইতিহাস

অলিম্পিক গেমস প্রথম শুরু হয় প্রাচীন গ্রিসে ৭৭৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। ৩৯৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলার পর গ্রিসের শাসক থিওডোসিয়াস পৌত্তলিকতার দোষ দিয়ে অলিম্পিক বন্ধ করে দেয়। এরপর ১৮৯৬ সালে ফ্রান্সের পিয়েরে দে কুবার্তিন আধুনিক অলিম্পিকের সূচনা করেন যা ঐ সালের ৬ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলে।

১৯২০ সালে অ্যান্টওয়ার্পে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে প্রথম অলিম্পিক পতাকা উড়ানো হয় যেটি ১৯১৩ সালেই নকশা করা হয়েছিল। পতাকার ৬টি রঙ- সাদা জমিনের উপর নীল, হলুদ, কালো, সবুজ ও লাল বৃত্ত সব দেশের জাতীয় পতাকাকে তুলে ধরেছে। প্রতিযোগীদের অলিম্পিক শপথ করানোও শুরু হয় এই অলিম্পিক থেকে।

১৯২৮ সালে গ্রিসে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে নতুন কিছু নিয়ম চালু হয়। বর্ণ ক্রমানুসারে অংশগ্রহণ করা দেশগুলো প্যারেড করে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে এবং স্বাগতিক দেশ সবার শেষে প্রবেশ করে।

১৯৩৬ সালে বার্লিনে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে সূচনা হয় অলিম্পিক মশালের। গ্রিসের অলিম্পিয়ায় প্রজ্বলিত অলিম্পিক আগুন থেকে শুরু করে এই মশাল যাত্রা করে বার্লিন পর্যন্ত। প্রায় ৩ হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে এই অলিম্পিক মশাল রিলেতে।

যুক্তরাষ্ট্র জাপানের হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে ৬ আগস্ট, ১৯৪৫ সালে। একই দিনে জন্মগ্রহন করা ‘হিরোশিমা’ বলে খ্যাত ইয়োসিনোরি সাকাই অলিম্পিক মশাল নিয়ে প্রবেশ করে টোকিওর স্টেডিয়ামে। ১৯৬৪ সালের এই অলিম্পিক গেমস প্রথম এশিয়াতে অনুষ্ঠিত অলিম্পিক গেমস।

১৯৯২ সালে স্পেনে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে বার্সেলোনার তীরন্দাজ এন্টোনিও রোবোলো অলিম্পিক মশাল হাতে নিয়ে প্রজ্বলন করেননি। তিনি তীর-ধনুক দিয়ে একটি আগুনের শিখা ছুঁড়ে মারেন এবং নিখুঁতভাবে আরেকজন অলিম্পিক কর্তা সময়মত আগুনের পাত্রটিতে অগ্নিসংযোগ করেন।

১৯৯৬ সালে কিংবদন্তী বক্সার মুহম্মদ আলী অলিম্পিক আগুন প্রজ্বলিত করেন। যদিও তিনি সে সময় কিছুটা বিতর্কিত ছিলেন কিন্তু মুসলিম বিশ্বের নায়ক হিসেবে খ্যাত আলী একটি আবেগঘন মুহূর্তের জন্ম দেন।

২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে চীন ঘোষণা দেয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করার। এই অনুষ্ঠানে ঠিক ২০০৮ জন পারকাশন বাদক আলোকিত স্টিক দিয়ে চীনের ঐতিহ্যবাহী ফৌ ড্রামস বাজায়। তিন ঘণ্টার এ অনুষ্ঠানে প্রায় ১৪ হাজার শিল্পী অংশগ্রহণ করেছিল।

২০১২ সালের অলিম্পিকে রাণী এলিজাবেথ প্রথম কোন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দুইবার অলিম্পিক গেমস উদ্বোধন করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। তিনি এর আগে ১৯৭৬ সালে মন্ট্রিলে কানাডার রাণী হিসেবে অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধন করেছিলেন।

অলিম্পিক গেমসের অন্যতম প্রধান এক দর্শন হল ক্রীড়ার মাধ্যমে মানবতার সমন্বিত বিকাশে অবদান রাখা। মৌলিক এই দর্শনে ফিরে যাওয়াটাই টোকিও অলিম্পিকের লক্ষ্য হওয়া উচিত। 

সূত্র
চ্যাম্পস টোয়েন্টিওয়ান ডটকম

ঈসা আহমাদ ইসহাক

সহযোগী সম্পাদক : নিউজ বিভাগ এবং প্রধান অনুবাদক: আরবী বিভাগ

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button