শ্বেত মরুভূমি নাম শুনলেই আপনার মনে হতে পারে কাল্পনিক কোনো স্থান। বৈচিত্র্যময় এ পৃথিবীর পরতে পরতে মিশে আছে সৌন্দর্য ও রূপের অনন্য সব উপাদান। এগুলো কিছু মানুষের সৃষ্টি হলেও সিংহভাগ আল্লাহ প্রদত্ত প্রাকৃতিক।
আফ্রো-এশিয়ার মরুর দেশ মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ফারাফ্রা মরূদ্যান। তার আরো ৪৫ কিলোমিটার উত্তরে অদ্ভুত ও বিস্ময়কর বিশাল বিস্তৃত রহস্যঘেরা ও সৌন্দর্য মণ্ডিত এক এলাকা, শ্বেত মরুভূমি বা হোয়াইট ডেজার্ট।
মরুঝড় এবং কালান্তরের আঘাত ও ক্ষয়ের কারণে এখানে কোথাও ধবধবে সাদা আর ক্রিম রঙের বিশেষ ক্যালসিয়াম-পাথর তৈরি হয়েছে, যা দেখলে স্তম্ভিত হতে হয়। চকচকে পাথরের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যাবলীর জন্য এটি বেশ বিখ্যাত। এছাড়াও এখানে অসাধারণ মসৃণ চুনাপাথরের আকর রয়েছে। খোলা প্রান্তরে দানবীয় কাঠামো গুলো আশ্চর্য এক ধাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাজারো বছর ধরে। এগুলোর বেশ মনোহারী নামও দেওয়া হয়েছে। যেমন- মাশরুম, আইসক্রিম, টেন্ট, মনোলিথ ইত্যাদি।
উদ্যানটিতে মাশরুমের মতো লক্ষ লক্ষ ছোট শ্বেত পাথরের বিভিন্ন আকৃতির সৌন্দয্য বর্ধন দেখে আপনার মনে হতে পারে এগুলো বাজ পাখি, কখনো মুরগি, কখনো একটা বুড়ো মানুষ টুপি পরে বসে আছে, আবার কখনো একপাল মেয়ে নাচছে। দিনের আলোর সঙ্গে এগুলোও রং বদলাতে থাকে। দুপুরের ঝকঝকে সোনালী রং থেকে সূর্যাস্তে হালকা গোলাপি হয়ে যাওয়া আকৃতি গুলো দেখে মনে হবে এগুলো অলৌকিক। মরুউদ্যানটি চাঁদনী রাতে আকাশের নিচের উজ্জ্বল নক্ষত্র গুলি চোখ ধাঁধানো এক জাদুকরী রঙ তৈরি করে।
এটি বিভিন্ন প্রাণীর ও আশ্রয়স্থল। যার মধ্যে বাস করে বিপন্ন রিম হরিণ, ডোরা কাটা দুর্বল হরিণ, বারবারী ভেড়া, লাল ও রূপালী শেয়াল এবং বালির শ্বেত বিড়াল। ২০০২ সালে মিশর এটিকে জাতীয় মরুউদ্যান সংরক্ষিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করে।