মদের লাইসেন্স দিয়ে মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার কোনো সুযোগ নেই
জুমার খুতবা ২৫.০২.২০২২
আজ রূপনগর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। জুমার খুতবায় আজারাবাদ মাদ্রাসার প্রধান মুহাদ্দিস ও সম্মানিত খতিব আলহাজ মুফতি মাওলানা আনোয়ার মাহমুদ।
আল্লাহর হামদ ও রসুল সা.-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর মদ ও সুদ প্রসঙ্গে কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের জন্য মদ ও সুদকে শর্তহীনভাবে হারাম করেছেন।
মদ প্রসঙ্গে তিনি কুরআনের আয়াত উল্লেখ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি ও লটারি ঘৃণ্যবস্তু, শয়তানের কারসাজি। এগুলো থেকে দূরে থেকো, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে’– সুরা মায়িদা ৯০।
খতিব মহোদয় বলেন, মদের লাইসেন্স দিলে মদ হালাল হয় না। মদ সর্বাবস্থায় হারাম। প্রকাশ্যে খেলে বা গোপনে খেলে, দোকানে খেলে বা বাসায় খেলে সকল অবস্থায় হারাম এবং এটি হারাম শর্তহীনভাবে। হারাম হওয়া সম্পর্কে কোনো এখতেলাফ বা মতপার্থক্য নেই।
আল্লাহপাক যে কাজটিকে হারাম ঘোষণা করেছেন সেটিকে বৈধ ঘোষণার অধিকার কারো নেই। মদের লাইসেন্স দিয়ে মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার কোনো সুযোগ নেই। ধর্ষণ, হত্যা ও নানাবিধ পাপাচারের অন্যতম কারণ মাদকাসক্তি। মদের সাথে জুয়া, মূর্তি ও লটারি সম্পর্কেও সচেতন করে বলেন, আল্লাহপাক এসবকে ঘৃণ্য ও শয়তানী কাজ বলে উল্লেখ করেছেন।
কোনো মুসলমান শয়তানকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে পারে না এবং মদ-জুয়ার মতো ঘৃণ্য কাজে নিজেকে সংশ্লিষ্ট করতে পারে না। মদ-জুয়ার মতো নোংরা কাজের প্রতি ঘৃণা ও এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য তিনি তাঁর মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানান।
সুদ প্রসঙ্গে খতিব মহোদয় বলেন, ‘আল্লাহপাক ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম’- সুরা বাকারা ২৭৫। অথচ একটি মুসলিমপ্রধান দেশে সুদ বৈধভাবে চালু আছে। সুদ মানুষকে স্বার্থপর ও কৃপণ করে।
আল্লাহপাক মানুষকে উদার হিসেবে দেখতে চান। বিপদাপদে পড়লে মানুষ একে অপরের পাশে দাঁড়াবে এটিই স্বাভাবিক। আল্লাহপর তাঁর বান্দাদের প্রয়োজনে ব্যয়কে আল্লাহর পথে ব্যয় এবং মানুষকে কর্জ দেয়াকে আল্লাহকে কর্জ দেয়া বলে উল্লেখ করে বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেয়ার কথা বলেছেন। করজে হাসানা এখন লোপ পাচ্ছে। করজে হাসানা হলো উত্তম ঋণ যার বিপরীতে কোনো সুদ দেয়া হয় না। সাহায্যপ্রার্থী নয় এমন অনেক মানুষ রয়েছে, যাদের সাময়িক প্রয়োজনে কর্জ দরকার হয়।
কর্জ প্রদানের ব্যাপারে হাদিসে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমাজে কর্জদানের এই নিয়ম দিনদিন লোপ পাচ্ছে। নৈতিক অধপতনের কারণেই মানুষ কর্জ প্রদানে বিমুখ হচ্ছে। ধার নিয়ে অনেকেই আর শোধ করতে চায় না।
খতিব মহোদয় হারাম পরিহারের প্রতি জোর তাগিদ দেন। ভালো কাজ বেশি করতে না পারলেও আল্লাহপাক যেসব কাজ হারাম করেছেন তা থেকে দূরে থাকা বড় ধরনের নেক আমল। ঘুষ, দুর্নীতি, ব্যবসায়ে অসাধুতা সমাজে প্রকটভাবে বিদ্যমান। সবই কবিরা গুনাহ এবং জাহান্নামে যাওয়ার কারণ। সমাজের সকল পাপাচার বিশেষ করে মদ, জুয়া, সুদ, ঘুষ থেকে দূরে অবস্থান করার জন্য তিনি তাঁর মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানান। সংক্ষেপিত।
মসজিদে আজ প্রথম নামাজ আদায়। বিশাল ক্যাম্পাস। সাথে রয়েছে মাদ্রাসা। দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। মোট ২৬ জন শিক্ষক ও ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। আল্লাহপাক দ্বীনের সকল খেদমত কবুল করুন।