সংকীর্ণতার সাথে আছে প্রশস্ততা
“ফা ইন্না মা'আল 'উসরি ইউসরান, ইন্না মা'আল 'উসরি ইউসরা”
বড় দুঃসময়ে রসুলল্লাহ সা.-কে সান্ত্বনা দিয়ে সুরা আলাম নাশরাহে আল্লাহপাক বলেছেন, ‘আসলে সংকীর্ণতার সাথে প্রশস্ততাও রয়েছে। নিশ্চয়ই সংকীর্ণতার সাথে আছে প্রশস্ততা। অতএব তুমি যখনই অবসর পাও ইবাদতের কঠোর শ্রমে লেগে যাও এবং তোমার রবের প্রতি মনোযোগী হও’- সুরা আলাম নাশরাহ ৫-৮।
রসুলুল্লাহ সা. নবুয়তের পূর্বে তিনি তাঁর আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সকলের ছিলেন নয়নের মণি। নবুয়তের দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে হয়ে পড়লেন তাদের ভয়ানক শত্রু। মক্কার কঠিন সেই কঠিন মুহুর্তে আল্লাহপাক তাঁর রসুল সা.-কে এই সুরার মাধ্যমে সান্ত্বনা দিয়েছেন। আল্লাহর এই বাণী কেবল রসুলল্লাহ সা. এবং সেই সময়ের জন্য সীমাবদ্ধ নয়। সকল মানুষ সবসময়ের জন্য এখন থেকে প্রেরণা পাবে।
নিরবচ্ছিন্ন সুখ বা দুঃখ বলে কিছু নেই। সুখের সময়ে আমরা যেমন আল্লাহকে ভুলে যাব না আবার দুঃখ-কষ্ট বেদনায় ভেঙ্গে পড়বো না, হতাশ হবো না। আল্লাহর ওয়াদা সংকীর্ণতার পরে নয়, সংকীর্ণতার সাথে সাথেই রয়েছে প্রশস্ততা এবং এটি তিনি বলেছেন দুইবার। দুঃখ বেশিদিন স্থায়ী হয় না। মানুষের জীবনে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, বিয়েসাদী, সংসার নানাক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সমস্যায় ধৈর্য ধারণের কোনো বিকল্প নেই। বুঝতে হবে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। এটি আল্লাহর প্রতিশ্রুতি।
শেষে করণীয় বলে দেয়া হচ্ছে। অবসরে ইবাদতের কঠোর শ্রমে লেগে যাও এবং তোমার রবের প্রতি মনোযোগী হও। আল্লাহর রসুল সা.যতখানি করেছেন আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা পারি, সচ্ছলতা ও অসচ্ছলতা বা সুখ ও দুঃখ সর্বাবস্থায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে। দুনিয়া একটি পরীক্ষাগার। আমরা যদি আল্লাহর প্রতি মনোযোগী হই আল্লাহও আমাদের হয়ে যাবেন। আমাদের হয়ে যাওয়া অর্থ বান্দার সকল প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব আল্লাহ নিজে গ্রহণ করে নেবেন।
তাই আসুন, হতাশা ঝেড়ে ফেলে আমরা আল্লাহর হয়ে যাই এবং বিনিময়ে আমরা আল্লাহকে পাব আমাদের অভিভাবক হিসেবে। বড় উত্তম অভিভাবক। যাঁর উপর নির্ভর করে বান্দা নিজের মধ্যে প্রশান্তি অনুভব করতে পারে।
হে আল্লাহ! আমরা যেন কেবল তোমাকেই অভিভাবক মানতে পারি সেই তৌফিক তুমি দান করো। আমিন।