মদিনার মসজিদে রসুলুল্লাহ সা. সাহাবিদের সাথে করে বসে আছেন, এমন সময় এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলে তিনি তার প্রতি দৃষ্টি দিয়ে সাহাবায়ে কেরাম রা.-দের বলেন, এই মুহূর্তে যে লোকটি প্রবেশ করছে সে জান্নাতি। এভাবে তিনি পরপর তিনদিন একই ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন যে, সে জান্নাতি।
রসুলুল্লাহ সা. কর্তৃক সুসংবাদপ্রাপ্ত ব্যক্তি সম্পর্কে একজন সাহাবির জানার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। তিনি তার ঘরে তিনদিনের জন্য মেহমান হন। এই তিনদিন তিনি তাঁর মাঝে বাড়তি কিছুই লক্ষ করেন না, একেবারে স্বাভাবিক জীবন। শেষে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, রসুলুল্লাহ সা. পরপর তিনদিন আপনাকে জান্নাতি বলে ঘোষণা দিলেন অথচ আপনার মাঝে বাড়তি কোনো আমলই লক্ষ করলাম না। জবাবে সেই সাহাবি বললেন, ভাই- আমি তো এমন কোনো আমল করি না যা দ্বারা এভাবে সম্মানিত হবো। তবে প্রতিদিন ঘুমানোর পূর্বে দোয়া-দরুদ পড়ার পর সবাইকে ক্ষমা করে দেই, কারো প্রতি কোনো হিংসা-বিদ্বেষ রাখি না। তখন সেই সাহাবি বললেন, আপনার এই হিংসামুক্ত জীবন ও ক্ষমাশীলতাই আপনাকে এতো মর্যাদাবান করেছে।
এটা নিশ্চিত যে, আর কোনো নবি-রসুল আসবেন না। মুহাম্মদ সা. শেষ নবি ও শ্রেষ্ঠতম নবি। কিন্তু নবি সা.- এর উত্তরাধিকার (ওয়ারিস) রয়েছেন এবং সেই উত্তরাধিকার হলেন আলেম সমাজ। আলেমদের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা পোষণ করবেন। তাদেরকে অসম্মান বা কষ্ট দেয়া মূলত আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে কষ্ট দেয়ার শামিল।
কোনো মানুষকে অহেতুক কষ্ট দেয়া মূলত আল্লাহকেই কষ্ট দেয়া। মানুষকে কষ্টদানকারী জালেমকে আল্লাহ তায়ালা বড়ো শক্তভাবেই ধরবেন। তার কোনো রেহাই নেই। আর মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার আল্লাহরই সাথে ভালো ব্যবহার। মানুষ তো আল্লাহরই প্রতিনিধি। আমরা কবিতায় পড়েছি, হাশরের দিন বিচারে বসিয়া সুধাবে জগতস্বামী- তুমি মোরে করো নাই সেবা যবে রুগ্ন যে ছিলাম আমি।
অর্থাৎ হাশরের দিন আল্লাহ বলবেন- আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তুমি খাবার দাওনি, আমি পিপাসার্ত ছিলাম, তুমি পানি পান করাওনি এবং আমি অসুস্থ ছিলাম তুমি সেবাযত্ন করোনি। মানুষ বলবে, এটি কেমন করে সম্ভব? আল্লাহ বলবেন, আমার বান্দাকে খাওয়ালে, পান করালে ও চিকিৎসা করালে আজ আমাকে পেতে।