আমি জানি আমার মার মর্যাদা আল্লাহর পরেই পৃথিবীবাসীর মধ্যে সর্বোচ্চ। আমি এটিও জানি তাঁর মর্যাদা আব্বা অপেক্ষা তিনগুণ বেশি। তারা আমার জন্য জান্নাত। কষ্ট দেয়া নয় সেবাযত্নের ত্রুটির কারণে উহ্ শব্দটি মুখ থেকে বেরিয়ে আসবে এমন কোনো আচরণও করা যাবে না। সবসময় নত হয়ে থাকতে হবে।
মৃত্যুর পরেও পিতা-মাতার জন্য সন্তানের করণীয় রয়েছে। তাঁদেরকে স্মরণ ও মাগফেরাতের জন্য দোয়া করতে হবে। দয়াময় আল্লাহ দোয়া করার ভাষাটিও শিখিয়ে দিয়েছেন- রব্বির হামহুমা কামা রব্বা ইয়ানি ছগিরা। সন্তানের দোয়া ব্যর্থ হতে পারে না, কক্ষনো না।
আমার স্ত্রী আমার সন্তানের মা। তার মর্যাদা কোনো অংশে কম নয়। আল্লাহর নির্দেশনায়, সে আমার বন্ধু ও সাথী। আমরা কেউ একে অপর থেকে বড় বা ছোট নয়। কিন্তু পারিবারিক শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আল্লাহ তাকে আমার অধীন করে দিয়েছেন। আমার আনুগত্যের বিনিময়ে তাকে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে। রসুলল্লাহ সা. বলেছেন, কোনো নারী মৌলিক ইবাদত পালনের সাথে সাথে যদি স্বামীর আনুগত্য করে তবে যে দরজা দিয়ে খুশি সে জান্নাতে প্রবেশ করুক।
আল্লাহ ও তাঁর রসুল সা.-এর বিধান মোতাবেক স্ত্রীর সাথে সদাচরণ করতে আমি বাধ্য। অন্যথায় আমার জান্নাত প্রাপ্তি অনিশ্চিত। আমি জানি, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা আমার সম্পর্কে স্ত্রীর সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন। নিশ্চয়ই স্বামীর আচরণে স্ত্রী অসন্তুষ্ট থাকলে আল্লাহর কাছে ভালো কিছু বলবে না। তাই আমি চেষ্টা করি সর্বদা ভালো আচরণ করার।
স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি সদাচরণ, তাদের চাওয়া – পাওয়ার প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং পরস্পরের প্রতি প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসা প্রকাশ দুনিয়া ও আখেরাতের সাফল্যের জন্য জরুরি। এব্যাপারে যেই কার্পণ্য করবে সেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রসুলল্লাহ সা. বলেছেন, মিরাজের রাতে আমাকে জাহান্নাম দেখানো হলো, সেখানে বেশিরভাগ দেখলাম নারী। কারণ হিসেবে পর্দাহীনতা ও স্বামীর অবাধ্যচরণকে দায়ী করেন।
পৃথিবীতে দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবনে সুখই শ্রেষ্ঠতম প্রাপ্তি। দুর্ভাগ্য, আজ যেন তা সোনার হরিণ। আমরা প্রায়ই দাম্পত্য কলহের কথা শুনি এবং তা বিবাহ বিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যায়। অথচ আমরা কুরআন থেকে লুত আ.-এর স্ত্রীর অবাধ্যচণ, নুহ আ. -এর ছেলের পিতাকে অমান্য করা ও আছিয়া আ.-এর স্বামী ফেরাউনের জুলুম-নির্যাতনের কাহিনী জানতে পারি কিন্তু পিতা-পুত্র ও স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদের কথা জানতে পারি না। ধৈর্য, সহনশীলতা ও ক্ষমাশীলতাই পারে একটি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে।
আসুন, বছরের শুরুতেই আমরা সকল সংকীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে উদার হই এবং শান্তিপূর্ণ পরিবার ও সমাজ গড়ে তুলি। আল্লাহ আমাদের সহয় হোন।