Site icon World 24 News Network

হাফেজ নেছার আহমাদ আন নাছিরীর সনদ লাভ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে লাল- সবুজের পতাকাকে বিশ্বের কাছে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের হাফেজ তরিকুল ইসলাম, সাইফুর রহমান ত্বকি, দৃষ্টিবন্ধি হাফেজ হাফেজ তানভীর হোসাইন, সা’আদ সুরাই, বশির আহমাদ, আবু রাহাত, আবু তালহা‌ও ফয়সাল আহমাদ সহ আরো অনেকেই।

এসকল বিশ্ব বিজয়ী কুরআনে হাফেজ গড়ার সফল কারিগর, বাংলাদেশের মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল শাইখ নেছার আহমাদ আন-নাছিরী নিজেই এবার বিরল এক সন্মানা পেলেন এলেমের কা’বাখ্যাত বিশ্বের প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরে।

গত সোমবার (২৯শে জুলাই) মিশরের রাজধানী কায়রোর নাসের সিটি তাওফিকিয়া হল রুমে রেওয়ায়েতে আসেমের উপর শু’বা ও হাফস শেষ করার এই বিরল সন্মানা সনদ শায়েখ নেছার আহমাদ আন নাছিরীর হাতে তুলে দেন দেশটির বিশ্ব বিখ্যাত ক্বারী শায়েখ আহমাদ-আহমাদ নাঈনা।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মিশরের বিখ্যাত ক্বারী শায়েখ মুহাম্মদ আল মুরিজী, শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ, শায়েখ আব্দুল লাতিফ ওহদান, শায়েখ সাঈদ আর- রাশেদ এবং আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতার বাংলাদেশি বিচারক শায়েখ শুয়াইব মুহাম্মদ আল-আজহারী ও মাওলানা মুহিব্বুর রহমান আল-আজহারী। তাছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিশরের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীর।

মুত্তাসিল সনদ পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই প্রতিনিধিকে শাইখ নেছার আহমাদ আন-নাছিরী বলেন, মিশরের বিশ্ববিখ্যাত কারী সাহেবগণ আমাকে মুত্তাসিল সনদ প্রদান করেছেন।

এই মুত্তাসিল সনদ গ্রহণ করার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা আমাকে ইলমের কা’বাখ্যাত মিশরে আরো একটি স্বপ্ন পুরণ করার তাওফিক দিলেন, আল্লাহ তায়ালা যেন বাকী রেওয়ায়েত গুলো শেষ করার তাওফিক দান করেন এবং মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যেন কুরআনের ছাত্র হিসেবে আমাকে কবুল করে নেন। আমি কুরআনের উচিলায় সব কিছু পেয়েছি, কুরআনের জন্যই জীবনের সব কিছু উৎসর্গ করতে চাই, মিশরে আছি দীর্ঘ দিন যাবত শুধুই কুরআনের ভালোবাসায়।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত মিশরে অবস্থান করায় বাংলাদেশকে অনেক বেশী মিস করছি, জানিনা বাংলাদেশ কেমন আছে, আল্লাহ তায়ালার কাছে ফরিয়াদ করি আল্লাহ তায়ালা যেন বাংলাদেশকে হেফাজত করেন। এবারের রমজান, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা নিজের পরিবার মা বাবা আত্বীয় স্বজন ছাড়াই কাটাতে হল শুধুই কুরআনের ভালোবাসায়। এর আগেও একাধিকবার দীর্ঘ সময় কুরআনের রেওয়াত শিখার নেশায় অতিবাহিত করেও শেষ করতে পারছিলাম না, বাংলাদেশে আমার অনেক গুলো মাদ্রাসা রয়েছে, সেগুলোর হাজারো শিক্ষার্থী আর শত শত শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের এহতেমামের দায়িত্ত থেকে সময় বের করা যে কত কঠিন সেটা মুহতামিমগণই ভালো করে অনুভব করেন।

তিনি বলেন, রেওয়াত শুরু করার সময় অনেকেই বলেছেন আমার ছাত্ররা সারা বিশ্বে কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়, আমার এই রেওয়াত শিখার কি প্রয়োজন? আর বাংলাদেশেও রেওয়াতের প্রচলন নেই বললেই চলে। আলহামদুলিল্লাহ, সব কিছু উপেক্ষা করে ইলমের কা’বাখ্যাত মিশরে শু’বা এবং হাফস শেষ করে ইজাযা গ্রহন করার তাওফিক আল্লাহ তায়ালা দান করেছেন।

এলেমের কা’বাখ্যাত মিশরে শায়খ ফারাবী বাগদাদ থেকে ১০ দিনের সফরে মিশর এসে দীর্ঘ বছর থাকার ইতিহাস শুনেছি। আমিও কুরআনের নেশায় নেশাগ্রস্ত হয়ে প্রিয় মাতৃ ভূমির মায়া ছেড়ে, নিজের রক্ত পানি করা একাধিক প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান রেখে ভিন্ন দেশে পরে আছি। আল্লাহ তায়ালা আমাকে যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কুরআনের ছাত্র হয়ে থাকার তাওফিক দান করেন।

Exit mobile version