রসুল সা.-এর সুন্নাত ইসলামী জিন্দিগী ও জীবনব্যবস্থার একটি অপরিহার্য শর্ত। অর্থাৎ রসুল সা. কর্তৃক উপস্থাপিত জীবনাদর্শ যে-কোনো মুসলমানের জন্য আদর্শস্বরূপ ও অবশ্যমান্য। কারণ আল্লাহপাক বলেন, রসুল সা. নিজেও বলেন, জীবনের সকল দিক সম্পর্কে তাঁর পেশকৃত যে-সিদ্ধান্ত ও সমাধান, তাকে নিঃশর্তভাবে হুবহু মান্য করার নামই ইসলাম।
ইসলাম অন্য কিছু নয়, ইসলাম হলো রসুল সা. প্রদর্শিত পথে চলারই সার্বক্ষণিক অঙ্গীকার। বাস্তব ক্ষেত্রে যাঁর যাপিত-জীবন যে-পরিমাণে ও যতটা নবি মুহাম্মাদ সা.-এর সমান্তরাল ও নিকটবর্তী, তিনি সেই পরিমাণে ও ততটা মুসলমান। যার মধ্যে রসুল সা. প্রদত্ত আদেশ-নিষেধের কোনো বিবেচনা ও অনুসৃতি নেই, তার মধ্যে মুসলমানিত্বও নেই, ইসলামও নেই।
ইসলাম যেহেতু কোনো খণ্ডিত জীবনদর্শন নয়, অথবা বিশেষ বিশেষ নিয়মাধীনে নির্ধারিত তিথি ও লগ্নের সাময়িক আনুষ্ঠানিকতা নয়; ইসলাম যেহেতু সকল মানুষের জন্য সর্বোতমুখী ও সার্বক্ষণিক কল্যাণের এক অব্যর্থ গ্যারান্টি, মনে রাখা জরুরি, এই নির্ভুল ও শাশ্বত ব্যবস্থাপত্রে এমন কোনো ফাঁক-ফোকর অবশিষ্ট নেই, যা একালের কোনো প্লেটো, এ্যারিস্টটল তাদের মেধা ও মনীষা ও বিদ্যাবত্তা দ্বারা সংশোধন বা পূর্ণ করে দেবে।
যারা এ-রকম ধারণা করে, তাদের জ্ঞাতার্থে এটুকু বলাই যথেষ্ট হবে যে, আল্লাহপাক ইসলামকে এমন সর্বোতমুখী ও পরিপূর্ণ ও মনোনীত দ্বীন (সুরা মায়িদা) হিসেবে ঘোষণা করেছেন, যার কিঞ্চিত্তম হস্তক্ষেপের অধিকার এমনকি রসুল সা.-কেও দান করা হয়নি, অন্যদের তো প্রশ্নই ওঠে না। বরং এই ধরনের চিন্তা ও দুর্মতি যাতে ভুলক্রমেও কারো মাথায় না-আসে, সেজন্য এমনকি রসুল সা.-কেও একটু কঠিনভাবেই সতর্ক করা হয়েছে।
এবং কোনো বদ্ধ-উন্মাদ কি অতিরিক্ত সংস্কারকামী কোনো মূঢ় বুদ্ধিজীবী যাতে ইসলামের সংবিধানকে অনু-পরিমাণও বিকৃত করতে না-পারে, সেই সুরক্ষারও ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহপাক। ‘কুরআন আমার তরফ থেকে অবতীর্ণ, আমিই তাকে সংরক্ষণ করবো’-সুরা হিজর।
(চলবে)