হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত। নবি করিম সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে কালিমায়ে শাহাদাত তেলাওয়াত করবে (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ সা. আল্লাহর বান্দা ও রসুল) সে জান্নাতের আটটি দরজার যে কোনো একটি দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। সহিহ মুসলিম ও তিরমিজি।
হয়তো বলবেন, জান্নাত কি এতোই সহজ? হ্যাঁ, সহজই তো। প্রিয়তম নবি সা.-এর মুখনিঃসৃত বাণী সবই সত্য। কোনো সন্দেহ নেই। তিনি তো আরো বলেছেন, রাস্তা থেকে কোনো কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে ফেললে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। তাঁর এ উক্তিও আমরা জানি, যে বললো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু সেই জান্নাতে প্রবেশ করলো।
সবই সত্য। বান্দাকে ক্ষমা করার ব্যাপারে আল্লাহ স্বাধীন ও সর্বেসর্বা এবং তাঁর কাজে কেউ প্রশ্ন করতে পারে না। তিনি সার্বভৌম, যাকে খুশি তাকে ক্ষমা করবেন। বান্দার যে কোনো আমল কবুল করে তার বিনিময়ে জান্নাত দিবেন। এজন্য আমরা কোনো আমল করে তা কবুলের জন্য আল্লাহর কাছে কাতরভাবে প্রার্থনা করবো।
এবারে কালিমা শাহাদাত নিয়ে একটু কথা বলি। আমরা জানি, আবু তালিব ইসলাম গ্রহণ না করেও রসুলল্লাহ সা.-এর জন্য ঢাল হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি যখন মৃত্যুশয্যায় তখন একদিকে রসুলল্লাহ সা. চেষ্টা করছেন চাচার মুখ থেকে কালিমার উচ্চারণ শুনতে, অপরদিকে আবু জেহেলরা বলছে বাপদাদার ধর্ম ত্যাগ করবেন? শেষে আবু তালিব কালিমা না পড়েই দুনিয়ার জীবন শেষ করলেন। এই কালিমা পাঠ তাকে জান্নাতে পৌঁছে দিত।
কালিমা পাঠ সাধারণ কোনো বিষয় নয়, মানুষের জীবনে সূচিত হয় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। তার আনুগত্য, ভালোবাসা সবই পরিবর্তন হয়ে যায়। এতদিন সে যাদের আনুগত্য করতো ও যাদেরকে ভালোবাসতো তা রাতারাতি পরিবর্তন হয়ে যায় (আনিই বুদুল্লাহ ওয়াজ তানিবুত তগুত)। আল্লাহর আনুগত্য করো, তাগুতকে অস্বীকার করো। এতদিন সে আনুগত্য করতো আল্লাহর নাফরমানদের, কালিমা উচ্চারণের সাথে সাথে তারা হয়ে পড়ে তার শত্রু।
এই কালিমা পাঠ জীবনে সর্বক্ষণ এবং চিন্তা চেতনায় ধারণ করে সর্বদা আল্লাহরই গোলামী করতে হবে। এই যদি হয়ে থাকে তাহলে জান্নাতে প্রবেশে আর কোনো বাধা থাকবে না।
আল্লাহপাক কালিমার ওপর অবিচল থাকার এবং সেই অনুযায়ী আমল করার তৌফিক আমাদের দান করুন। আমিন।