পিতামাতার সন্তুষ্টির মধ্যেই রয়েছে জান্নাত (পর্ব-১)

জুমা আলোচনা- পরানখালী উত্তরপাড়া জামে মসজিদ

বিশেষ দ্রষ্টব্য
  • বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। যাদের আত্মদানের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও মাগফেরাত কামনা করি সেইসব বীর শহিদদের এবং যারা বেঁচে আছে তাদের সুস্থতা কামনা করি। সাথে সাথে শহিদ পরিবারসমূহের সার্বিক কল্যাণ কামনা করি।

আমি গ্রামের কয়েকটি মসজিদে জুমা আদায় করলাম। অধিকাংশ মসজিদে মুসল্লিরা অনেক বিলম্বে আসেন। অথচ জুমার দিন আমাদের ইদের দিন। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন। আজানের পরপরই আমাদের উচিত আল্লাহর ঘরে উপস্থিত হওয়া। আজানের পরে জুমার নামাজ ও খুতবা শ্রবণ ছাড়া আমাদের আর কোনো কাজ নেই। শুধু বেচা-কেনা নয়, কোনো কাজই জায়েজ নয়।

মসজিদে আগমনের ভিত্তিতে সওয়াব লেখা হয়। পর্যায়ক্রমে আগমনের ফলে উট, গরু, ছাগল কুরবানির সওয়াব মুসল্লিদের আমলনামায় লেখা হয়। আপনাদের পক্ষে কি সম্ভব একটি উট কুরবানি করার? অথচ একটু সতর্ক হলে সহজেই উট কুরবানির সওয়াব পেতে পারেন। খতিব মহোদয় যখনই মিম্বরে আরোহন করেন তখনই ফেরেশতারা সওয়াব লেখা বন্ধ করে খুতবা শোনা শুরু করেন। তাই সাড়ে বারোটায় আজান হওয়ার সাথে সাথে আপনারা মসজিদে চলে আসবেন।

ঢাকায় অনেক মসজিদ রয়েছে যেখানে সাড়ে বারোটার পূর্বেই মসজিদ পূর্ণ হয়ে যায়। এই মসজিদে ১.০০ থেকে আলোচনা, এরপর খুতবা এবং নামাজ। জুমার দিনে আপনাদের কাজই হবে খুতবা শ্রবণ ও নামাজ আদায়। প্রয়োজনীয় সুন্নত নামাজ আদায় শেষে সর্বদা প্রথম কাতারে বসার চেষ্টা করবেন। প্রথম কাতারে বসা প্রসঙ্গে রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, প্রথম কাতারে দাঁড়ানোয় কতো সওয়াব তা যদি মুসল্লিরা বুঝতো তাহলে লটারি করা লাগতো।

আল্লাহপাক সদাচরণ পছন্দ করেন। রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, জমিনে যারা আছে তাদের সাথে সদাচরণ করো তাহলে আসমানে যিনি আছেন তিনিও (মহান আল্লাহ) তোমাদের সাথে সদাচরণ করবেন। ছোট- বড়ো, ধনি-গরিব সবার সাথে উত্তম আচরণ করতে হবে। সদাচরণের সবচেয়ে বড়ো হকদার হলেন আপন পিতা-মাতা। সুরা বনি ইসরাইলে আল্লাহপাক বলেছেন, পিতা-মাতা উভয়ই বা কোনো একজন যদি বার্ধক্যে উপনীত হন তাহলে উহ্ শব্দ পর্যন্ত উচ্চারণ করো না। তাদের সাথে সবসময় নম্র আচরণ করিও।

রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, বৃদ্ধ মা-বাবার প্রতি প্রসন্নচিত্তে তাকালে কবুল হজের সমান সওয়াব পাওয়া যাবে। একদিন মিম্বরে আরোহনের সময় রসুলুল্লাহ সা. আমিন, আমিন, আমিন বলেন। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করেন, ইয়া রসুলুল্লাহ সা.! আপনি আমিন, আমিন, আমিন বলছেন কেন? জবাবে বলেন, এইমাত্র জিবরাইল আ. আমাকে বলে গেলেন, যে ব্যক্তি বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে পেল অথচ তাদের খেদমত করে জান্নাত লাভ করতে পারলো না সে যেন ধ্বংস হয়, আমি বললাম- আমিন (দীর্ঘ হাদিসের অংশ)।

চলবে-

প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী

কলামিস্ট এবং সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button