Site icon World 24 News Network

কুরআনের পাঠ

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

ধানমন্ডি মসজিদ উত তাকওয়ায় আজ ফজরে তেলাওয়াত করা হয়েছে সুরা আরাফ-এর ২৬-৩৯ আয়াত। নামাজ শেষে তেলাওয়াতকৃত অংশ থেকে পোশাক নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন মসজিদের সম্মানিত সহকারী ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশীদ।

আল্লাহপাক ২৬ নং আয়াতে হে আদম সন্তান বলে সমগ্র মানব জাতিকে সম্মোধন করেছেন। অন্যান্য প্রাণীকে প্রাকৃতিক নিয়মে তাদের যৌনাঙ্গকে আবরণ দেয়া হয়েছে। মানুষের জন্য আল্লাহ নাজিল করেছেন পোশাক। পোশাকের সাহায্যে লজ্জাস্থান আবৃত করে রাখার অনুভূতি মানুষের প্রকৃতিতে আল্লাহ নিজেই দিয়ে রেখেছেন। তারপরও শয়তানের প্ররোচনায় মানুষ নগ্নতা ও অশ্লীলতার পথে অগ্রসর হয়। জান্নাত থেকে চলে আসার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে শয়তান। শয়তানই মানবজাতির আদি পিতা-মাতাকে পরস্পরের সম্মুখে নগ্ন করে ফেলেছিল। শয়তানের সেই তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। খোদ কাবা ঘরে মানুষ ধার্মিকতার নামে উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করেছে।

২৬ নং আয়াতে পোশাকের তিনটি উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছে।
(হে বনি আদম! তোমাদের শরীরের লজ্জাস্থানগুলো ঢাকার এবং তোমাদের দেহের সংরক্ষণ ও সৌন্দর্য বিধানের উদ্দেশ্যে আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাজিল করেছি। আর তাকওয়ার পোশাকই সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্তর্ভুক্ত, সম্ভবত লোকেরা এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে।)

প্রথম উদ্দেশ্য হলো, লজ্জাস্থান আবৃত করে রাখা অর্থাৎ পোশাক এমন হবে যাতে মানুষের লজ্জাস্থান পুরোপুরি ঢেকে থাকে। লজ্জাস্থান আবৃত বলতে ইসলাম সতর আবৃত করার কথা বলে। পুরুষের সতর নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং নারীর সতর মুখমণ্ডল, দু’হাতের তালু (হাতের কব্জি) ও দু’পায়ের পাতা ছাড়া সমস্ত দেহ। সতর আবৃত করে রাখা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ফরজ।

দ্বিতীয়ত, পোশাক হবে শোভাবর্ধক। সুন্দর ও পরিপাটি হবে অর্থাৎ পোশাক পরার পরে যেন মানুষকে সুন্দর দেখায়। সৌন্দর্যবর্ধক কিন্তু সেটি যদি লজ্জা নিবারণ না করে তাহলে সেটি ইসলামের দৃষ্টিতে পোশাক হবে না।

তৃতীয়ত বলা হয়েছে তাকওয়ার পোশাক, সেটাই হবে কল্যাণকর। অর্থাৎ পোশাকে বাহুল্য বা অপচয় থাকবে না বা অহংকার প্রকাশক হবে না বা রুচি, ভদ্রতা ও শালীনতার খেলাপ হবে না। মুসলমানদের নামাজ আদায় করতে হয় এবং নামাজ আদায়ে যেন বিঘ্ন না ঘটে।

শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। সে মানুষের মাঝে অশ্লীলতা ও নির্লজ্জতা ছড়িয়ে দিতে চায় এবং সে পোশাকের মাধ্যমে নির্লজ্জতার বিস্তার ঘটায়। পোশাকের ক্ষেত্রে সৌন্দর্যের পাশাপাশি আমাদের সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে সতর আবৃত করার দিকে।

নামাজের সময় উত্তম পোশাক পরিধানের কথা বলা হয়েছে (৩১ নং আয়াত)। আল্লাহর সম্মুখে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে পোশাক পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও রুচিসম্মত হতে হবে। আর আহার করো, পান করো ও অপচয় করবে না, কারণ আল্লাহ অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না। মুসলমানদের চলার ক্ষেত্রে এটি একটি মূলনীতি। অন্যত্র বলা হয়েছে অপচয়কারী শয়তানের ভাই। তাই আমাদের খাদ্যগ্রহণ, পোশাক-পরিচ্ছদ ও বাসস্থান সকল ক্ষেত্রে আমরা যেন অপচয় থেকে দূরে থাকি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেফাজত করুন।

Exit mobile version