‘আল কুরআনের আলোকে সিয়াম’ বইটিতে সিয়াম সম্পর্কে কুরআনের তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিয়ামের সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য, পদ্ধতি বা করণীয়, সময়কাল, প্রকারভেদ এবং সংশ্লিষ্ট ধারা-উপধারা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে।
যেহেতু সিয়াম বিষয়ে আয়াত সংখ্যা খুব বেশি নয়, কুরআনে সিয়াম শব্দটি এর বিভিন্ন শব্দরূপে মাত্র ১৪ বার ব্যবহৃত হয়েছে, তাই সিয়াম সম্পর্কে কুরআনের তথ্যগুলো সমাজে মোটামুটি প্রচলিত রয়েছে। তা সত্ত্বেও সিয়ামের তাৎপর্য বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে ব্যাপক উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয় এবং তা প্রমাণ করে যে, সমাজে সিয়াম সম্পর্কিত আলোচনায় এ বিষয়ে যথানিয়মে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে।
সিয়াম যে শুধু আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ নয় এবং কোনো সীমিত দিনসংখ্যার সাথে সম্পর্ক ছাড়া সিয়ামের উল্লেখ করলে তা যে সিয়ামের মূল অর্থ (আত্মসিংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ) অনুসারে ‘আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয় তথা যাবতীয় অন্যায় থেকে নিজেকে বিরত রাখা’ বুঝায়, এ বিষয়টি তেমন আলোচিত হয় না। এ ছাড়াও সিয়ামের মাস ‘শাহরু রমাদান’ (রমাদানের মাস) সম্পর্কে যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা ছাড়া চান্দ্রবর্ষের নবম মাসই রমাদানের মাস হিসেবে সমাজে প্রচলিত করে দেয়া হয়েছে।
কুরআন নাযিলের মাসটিকে সঠিক নিয়মে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে তার অর্থগত তাৎপর্য এবং হারাম মাসসমূহের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টিকে বিবেচনায় নেয়া হয় না। এ বইয়ে বিষয়টি বিস্তারিত পর্যালোচনার মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে, ‘রমাদানের মাস’ হলো হারাম মাসসমূহের (বন্য পশু সংরক্ষণের এবং আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিরতির জন্য সংরক্ষিত মাসসমূহের) অন্তর্ভুক্ত প্রথম মাস এবং তাই সার্বিক বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, তা Spring Equinox কে অন্তর্ভুক্তকারী বসন্ত ঋতুর প্রথম মাস।