Site icon World 24 News Network

আত্মীয়তার হক

“হে মানব জাতি! তোমাদের রবকে ভয় করো যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি প্রাণ থেকে। আর সেই একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। তারপর তাদের দু’জনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। >>

সেই আল্লাহকে ভয় করো যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করো এবং আত্মীয়তা ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকো।

নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ তোমাদের ওপর কড়া নজর রাখছেন”  (সূরা নিসা ১)

মানবজাতির আদি পিতা ও মাতা হযরত আদম (আ) ও হাওয়া (আ)। এ দিক দিয়ে সবার মধ্যে একটি ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক রয়েছে। তারপর আল্লাহপাক মানবজাতির শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে সুস্পষ্টভাবে পারস্পরিক অধিকার উল্লেখ করেছেন। মাতা-পিতা ও সন্তান, স্বামী-স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম-মিসকিন, আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পথিক ও অন্যান্যদের সাথে সু-সম্পর্ক ও হক আদায়ের কথা বলেছেন।

এখানে আত্মীয়তার হক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা করবো। আত্মীয়তা মূলত পিতা, মাতা এবং বিবাহের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয়। ইসলাম সকল ধরনের সম্পর্ককে গুরুত্ব প্রদান করেছে। কুরআন ও হাদিসে এ প্রসঙ্গে অসংখ্য নির্দেশনা রয়েছে। কোথাও উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে আবার কোথাও ভয় দেখানো হয়েছে। হাদিসেরে ভাষা-

‘কেউ যদি রুজির প্রশস্ততা ও হায়াত বাড়াতে চায় সে যেন আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদাচরণ করে’। আবার ভয় দেখানো হয়েছে- ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না’।

আত্মীয়তার হক বলতে তাদের খোঁজ-খবর নেয়া, বিপদাপদে পাশে দাঁড়ানো, সমবেদনা জ্ঞাপন, আনন্দ-স্ফুর্তিতে শরীক হওয়া, কল্যাণ কামনা, দাওয়াত দান, দাওয়াতে শরীক হওয়া, উপহার আদান-প্রদানসহ সব সময় সদাচরণ করা।

রসুল (সা) বলেছেন, কোনো আত্মীয় ভালো আচরণ করলে তার সাথে ভালো আচরণ করা আত্মীয়তার হক নয় বরং তোমার সাথে কেউ অসদাচরণ করলে বা সম্পর্ক ছিন্ন করলে তার সাথে সম্পর্ক জুড়ে দেয়াকেই বলে আত্মীয়তার হক।

এ দুনিয়ার জীবনে পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী বা মানুষের সাথে বৈষয়িক নানা কারণে সম্পর্ক খারাপ হতেই পারে। কোনো মুসলমানের কথাবার্তা বন্ধ করে থাকা বা সেটা জিইয়ে রাখা বা সম্পর্ক উন্নয়নে বাধাদান মুসলমানের কাজ নয়। বরং সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা ও সহযোগিতা করা প্রভূত পুণ্যের কাজ। এমন কি এ ব্যাপারে মিথ্যা বললে সেটা আর মিথ্যা থাকে না।

আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করা। হিংসা-বিদ্বেষ ও ঘৃণা বংশ পরম্পরায় জারি রাখা জাহিলিয়াতের আচরণ যা বাংলাদেশে বিরাজমান। আল্লাহপাক আমাদেরকে এ অবস্থা থেকে হেফাজত করুন।

Exit mobile version