স্বাধীনতার দাবি হলো প্রত্যেক মানুষ তার মান-ইজ্জত -সম্মান এবং জীবন ও সম্পদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ে জীবন যাপন করবে। রাষ্ট্র ও সমাজ তার পূর্ণ গ্যারান্টি দিবে। মানুষকে গালি দেয়া, তাকে হেয় ও অপদস্থ করা, মারপিট করা, গুম-খুন করা সবই কবিরা গুনাহ। আল্লাহর বাণী, ‘নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্যে যারা মানুষকে সামনা-সামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে।’ একটু গালমন্দ করা, আড়ালে একটু দোষ প্রচারের ফল যদি হয় নিশ্চিত ধ্বংস (হুতামায় নিক্ষেপ); তাহলে গুম-খুনের পরিণতি কী হতে পারে?
ইসলাম মানুষের অবাধ চলাচল এবং তার রুটি-রুজি তালাশের স্বাধীনতা দান করেছে। এ ক্ষেত্রে কারো বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরী করা, দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেড়ানো ইসলাম পছন্দ করে না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণী স্মরণ করতে হয়- ‘হে ইমানদারগণ! বেশি ধারণা ও অনুমান করা থেকে বিরত থাকো, কারণ কোনো কোনো ধারণা ও অনুমান গুনাহ। দোষ অন্বেষণ করো না। তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে। এমন কেউ কি তোমাদের মধ্যে আছে, যে তার নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে? দেখো, তা খেতে তোমাদের ঘৃণা হয়। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ অধিক পরিমাণে তওবা কবুলকারী এবং দয়ালু’- সুরা হুজুরাত ১২।
গোপন বিষয় খোঁজাখুঁজি করতে রসুল সা. নিষেধ করেছেন। কেউ যদি আড়াল থেকে কারো ঘরে উঁকি মারে তবে তার চোখ ফুটো করে দেওয়ার জন্য তিনি বলেছেন। দু’জন লোকের আলাপরত অবস্থায় তৃতীয় জন তা শোনার চেষ্টা করাকে গুনাহ বলেছেন। বর্তমান যুগে অপরের চিঠি পড়া বা মোবাইলে আড়িপাতা একই অপরাধ। এ সবই মানুষের স্বাধীনতা বা অধিকার হরণের উদাহরণ। অবশ্য অপরাধী চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে সবই বৈধ।
অধিকার হরণ প্রসঙ্গে ওমর রা.-এর একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়। তিনি নাগরিকদের অবস্থা জানার জন্য ছদ্মবেশে বের হতেন। একদিন চলার পথে এক বাড়ি থেকে গানের আওয়াজ শুনতে পান। তিনি দেয়াল টপকিয়ে দেখেন যে সেখানে নারী ও মদ। তিনি লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হে আল্লাহর দুশমন- তুই কি মনে করেছিস, অপরাধ করবি আর কেউ তা টের পাবে না?’
(চলবে)