বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীর মাঝে আচরণগত পার্থক্য

বিশ্বাসী বান্দা ক্ষমা করার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পায়

আল্লাহপাক তাঁর অসংখ্য নেয়ামতে ভরা জান্নাতের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন এমন লোকদের জন্য যারা ঈমান এনেছে ও সাথে সাথে নেক আমল করেছে। আরো অনেক গুণের কথা বলা হলেও ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ আল্লাহর বান্দারা আশা করতে পারেন তাঁর রবের ক্ষমা ও জান্নাত।

নেক আমলের মাঝে মানুষের সঙ্গে সদাচরণ একটি বড় গুণ। বিশ্বাসীরা হয় নম্র-ভদ্র ও বিনয়ী সবক্ষেত্রে (সাক্ষাতে-অসাক্ষাতে, ফেসবুকে ও হাসি-ঠাট্টাচ্ছলেও) এবং সবার জন্যে (পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী এবং সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের সাথে)।

আল্লাহর বাণী- ‘নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনা- সামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে’। এতে বোঝা যায়, গোপনে ও প্রকাশ্যে বা ইশারা-ইংগিতে এমন কোনো কথা বলা বা আচরণ করা যাবে না যাতে আল্লাহর কোনো বান্দা কষ্ট পায়। এই মন্দ আচরণই তার ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। আমরা ফেসবুকে অনেক বাজে মন্তব্য দেখি। এর পেছনে কোনো যুক্তি নেই। এর পেছনে মনের সংকীর্ণতা ও আখিরাতে বিশ্বাসের দুর্বলতা বৈ আর কোনো কারণ নেই।

অপরদিকে, একজন অবিশ্বাসী বান্দা সাধারণত হয় কর্কশভাষী ও রূঢ় স্বভাবের। তার কাছে মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান কখনই নিরাপদ নয়। মানুষ সব সময় তাদের থেকে দূরে থাকতে চায়। তারা অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করে এবং মানুষকে অপমান করে আনন্দ পায়। আসলে শয়তানকে প্রভু হিসেবে গ্রহণ করায় তাদের মধ্যে একটি কুৎসিত চরিত্র সৃষ্টি হয়। তাদের কথাবার্তা, আচার-আচরণ ও লেখনির মধ্যে সবসময় হিংসা-বিদ্বেষভাব থাকে এবং তারা সমাজের মানুষের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিতে চায়। তাদের সমালোচনার ভাষাও হয় আক্রমণাত্মক। সামনা-সামনি ও পেছনে বা ফেসবুকে সর্বত্রই তাদের একই আচরণ লক্ষণীয়।

বিশ্বাসী বান্দা ক্ষমা করার মধ্যে আনন্দ খুঁজে, কারণ সে জানে আল্লাহর বান্দাকে ক্ষমা করা হলে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে ক্ষমা করবেন। পক্ষান্তরে একজন অবিশ্বাসী প্রতিশোধ গ্রহণের মাঝে আনন্দ খুঁজে, কারণ সে তো আর পরকালে বিশ্বাস করে না। সে মনে করে প্রতিশোধ নিতে ব্যর্থ হলে সে হেরে যাবে।

প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী

কলামিস্ট এবং সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button