আত্মার কাছাকাছি যে বাস করে, তার নামই বন্ধু। বন্ধুত্ব হলো একরাশ ভালোবাসা আর উচ্ছ্বাস। তাই বলি বন্ধু মানে শুধু মজা করা বা আড্ডা করা নয় বন্ধু মানে একে অপরের খুশিতে খুশি হওয়া, একে অপরের দুঃখে পাশে দাঁড়ানো, আবার একে অপরের স্বপ্ন পূরণের রাস্তায় সঙ্গী হওয়া । আমাদের জীবনে বন্ধুদের গুরুত্ব ঠিক কতটা তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আল্লাহর ঘোষণা মুমিনরা হলো একে অপরের বন্ধু,পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় আর অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে, আর তারা সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এদেরকে আল্লাহ শীঘ্রই দয়া করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।( সূরা তাওবা-৭১) বন্ধুত্ব হতে হবে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য, যখন দুই ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে আপোসে বন্ধুত্ব স্থাপন করে, তখন তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয় সেই ব্যক্তি, যে অপরকে অধিক গাঢ়ভাবে ভালোবাসে।”( আল হাদিস) এমন কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করা যার জন্য পরকালে আফসোস করতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, তারা কিয়ামতের দিন আফসোসের সুরে বলবে ‘হায়! আমরা যদি অমুক ব্যক্তিকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করতাম’। (সুরা ফুরকান – ২৮) দেখা যায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে আমাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। কিন্তু আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের মাধ্যমে যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে সে বন্ধুত্ব সবচেয়ে বেশি দৃঢ় হয়। অপরদিকে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য উপকার লাভের আশায় সামাজিক শ্রেণী ও জাতিগত পরিচিতি লাভের ভিত্তিতে যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে তা বেশিদিন টিকে থাকে না। এ সকল ক্ষেত্রে কারো স্বার্থে কোন রকম আঘাত লাগলেই বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায়। ইসলামের দৃষ্টিতে উপযুক্ত লোকদের সাথে বন্ধুত্ব করা উচিত এবং সারা জীবন যেন বন্ধুত্ব অটুট থাকে সে চেষ্টা করা। যে বন্ধুত্ব আমাদের জীবনের আমূল পরিবর্তন করে দেয়, যে বন্ধুত্ব ছাড়া আমাদের চলা অসম্ভব , সে বন্ধুত্ব লালনের জন্য আমাদেরকে কোরআন ও হাদীসের নির্দেশনা মানতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুক।
লেখক, কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব, বাংলাদেশ কওমী ছাত্রপরিষদ।