নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা একটি বড়ো গুণ। নানাভাবে এ গুণ মানুষের মধ্যে বিকশিত হয়। পরিবার, শিক্ষা-দীক্ষা, প্রশিক্ষণ, পারিপার্শিকতা, ভালো মানুষের সাহচর্য অন্যতম নেয়ামক হিসেবে কাজ করে। সর্বোপরি দরকার দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি। কাজের প্রতি আগ্রহ ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং পরিশ্রমপ্রিয়তা মানুষকে এগিয়ে দেয়। কিছু গুণ আল্লাহপ্রদত্ত এবং বাকি মানুষকে অর্জন করতে হয়। মানুষকে স্বাবলম্বী হিসেবে নিজেকেই দাঁড় করাতে হয়। ইংরেজিতে একটি কথা বহুল প্রচলিত- Nurse the baby, protect the child and free the adult. সদ্যজাতকে সেবাযত্ন করো, শিশুকে রক্ষণাবেক্ষণ এবং বড়কে মুক্ত করে দাও।
আলোস্য একটি অভিশাপ। অলস মানুষ নিজের, পরিবারের ও সমাজের জন্য সম্পদ বিবেচিত হয় না। অথচ মানব সম্পদ হলো সবচেয়ে বড়ে সম্পদ। ব্যক্তিকে সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন আত্মোপলব্ধি। নিজেকেই বুঝতে হবে, আমি আল্লাহর সেরা সৃষ্টি, আমার মাঝে লুকিয়ে আছে অপার সম্ভাবনা। এভাবেই নিজেকে আবিষ্কার করতে হয়।
প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন তাঁর ছেলের প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন যা পরবর্তীতে ঐতিহাসিক গুরুত্ব পায়। তিনি লিখেছিলেন, ‘আমার ছেলেকে শেখাবেন- পাঁচটি ডলার কুড়িয়ে পাওয়ার চাইতে একটি উপার্জিত ডলার অধিক মূল্যবান। নিজের উপর তার যেন সুমহান আস্থা থাকে- এমন কী সবাই যদি সেটাকে ভুলও মনে করে’। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাবস্থায় তাঁর দুই মেয়েকে রেস্টুরেন্টে কাজ করার জন্য দিয়েছিলেন। তারা জগৎবাসীকে দেখিয়ে দিয়েছেন কাজের মধ্যে কোনো অগৌরব নেই। নিজের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তির মর্যাদা অনেক উচ্চে।
জীবনে যারা সফল হয়েছে, তাদের সাফল্যের পেছনে বড়ো কার্যকর শক্তি হলো আত্মবিশ্বাস। তারা মনে করেছে, আমি পারবো এবং একাগ্রতার সাথে প্রচেষ্টা চালিয়েছে ও ধৈর্য অবলম্বন করেছে, সাফল্য তাদেরকে ধরা দিয়েছে। এর মধ্যে কোনো মন্ত্র নেই। যুগে যুগে মনীষীরা তাই বলেছেন এবং আল্লাহর সুন্নাহও (নিয়ম) তাই। ভলটেয়ারের উক্তি, ‘প্রতিভা বলে কোনো জিনিস নেই, পরিশ্রম করো, সাধনা করো, প্রতিভাকে অগ্রাহ্য করতে পারবে’। তিনি আরো বলেছেন, ‘লোকে বলে, সব মানুষ কবি হতে পারে না, বক্তা হওয়াও ইশ্বরের গুণ, এ কথা আমি বিশ্বাস করি না’।