ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে সুখী ও সফল হওয়ার জন্য উদারতার কোনো বিকল্প নেই। শুধু কি দুনিয়ার জীবনে? না, আখেরাতের সুখও নির্ভর করে উদারতার ওপর। আল্লাহ নিজে উদার এবং উদারতা পছন্দ করেন। তিনি উদার বলেই তো পৃথিবীটা টিকে আছে। আল্লাহর কতো নাফরমানি, কতো জুলুম-অত্যাচার তারপরও আল্লাহ তায়ালা ছাড় দিয়ে যাচ্ছেন। শাস্তি দেয়ার জন্য তাঁর মধ্যে কোনো তাড়াহুড়ো নেই। ক্ষমা করার মধ্যেই তাঁর যত আনন্দ।
অনুদার ব্যক্তি পদে পদে হোঁচট খায়। দাম্পত্যজীবন, পারিবারিকজীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয়জীবন সর্বত্র তার জীবনটা সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। দাম্পত্য সম্পর্ক টিকতে চায় না, আত্মীয়-স্বজনের ভালোবাসা হারায়, সমাজে একঘরে হয়ে পড়ে এবং রাষ্ট্রীয়জীবনে স্বস্তি থাকে না।
উদার মানুষ সহজে অপরের দোষ-ত্রুটি উপেক্ষা করতে পারে, ক্ষমা করতে পারে, প্রতিশোধস্পৃহা তার মধ্যে কাজ করে না। হিংসা-বিদ্বেষ থেকে সে মুক্ত, শুধুই মানুষের কল্যাণ চায়। কল্যাণকামী মানুষের সাথে শত্রুতা করে কেউ এগোতে পারে না। উদারমনা মানুষের মাঝে থাকে প্রশান্তি। সে দুনিয়াতেও সুখী আবার আখেরাতেও আল্লাহর ক্ষমা লাভে ধন্য হবে। আল্লাহ বলেন, যে স্বীয় মনের সংকীর্ণতা থেকে নিজেকে রক্ষা করলো সেই প্রকৃত কল্যাণ লাভ করলো।
উদারতা, প্রশস্ততা, ক্ষমাশীলতা, মহানুভবতা মানবচরিত্রের অমূল্য সম্পদ। দুর্ভাগ্য, এসব মহৎ গুণের চর্চা নেই। আছে হিংসা-বিদ্বেষ ও অপরকে দাবিয়ে রাখার প্রবণতা। ক্ষমার গুণ বিদায় নিয়েছে। এর পেছনে রয়েছে অনুদার মানসিকতা। কৃপণ ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না, হিংসুটেও যাবে না। লাইলাতুলকদর ও বিশেষ বিশেষ রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন। কেবল ক্ষমা করেন না, মুশরিক ও হিংসুককে।
আসুন, আমরা উদার হই, মানুষকে ক্ষমা করি এবং প্রশান্তির জীবন যাপন করি।