শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪২৯
আমরা যেন ইতিহাস ভুলে না যাই
পৌত্তলিক মক্কাবাসীদের অত্যাচারে প্রিয় রাসুল (সা:) আল্লাহর কাছ থেকে প্রাপ্ত ইশারায় সিদ্ধান্ত নিলেন অন্ধকার মক্কা ছেড়ে আলোকিত মদিনায় হিজরত করবেন।
সেই হিজরত শুধু এক শহর থেকে আরেক শহরে দৈহিকভাবে স্থানান্তরই ছিলনা, বরং সে হিজরত ছিল অন্ধকার থেকে আলোর পথে (মিনাজ জুলুমা-তি ইলান নুর), অশুভ অকল্যাণ থেকে শুভ ও কল্যাণের পথে, অসত্য ও অসুন্দর থেকে সত্য ও সুন্দরের পথে, অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে ইনসাফ ও ন্যায় ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে।
তাঁর সেই ঐতিহাসিক মদিনা যাত্রা থেকেই শুরু হলো নতুন এক গণনা যা হিজরী সন বলে পরিচিত। কাল পরম্পরায় হিজরী ৯৬৩ সনে সম্রাট আকবর ফসলি সন হিসেবে একে বাংলার জনগণের হৃদয়ে স্থান দিলেন নতুন ভাবে, সরাসরি ৯৬৩ বঙ্গাব্দ ঘোষণা করে।
সেই থেকে আমার ধর্মীয় গণনার সাথে আমার বঙ্গীয় ভূখণ্ডের ভৌগলিক, নৃতাত্ত্বিক ও ঐতিহ্যিক সাংস্কৃতিক আচার যোগ হয়ে আমরা পেলাম বাংলা সন। বাংলা সনের জন্ম হয়েছে ৯৬৩ বছরের সমৃদ্ধ হিজরী সন এর উপর ভিত্তি করে, কোন হুতুম পেঁচা বা মূর্তি-মুখোশের আড়ালে নয়। মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানোর নামে আগুনের উপাসনা বা মূর্তি পূজার মতো করে মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রতিষ্ঠা করার জন্য নয়।
বাংলা সন আমার মুসলিম ঐতিহ্য, আমার গর্বের ধন। আজকে যারা মুসলিম সন্তান হয়েও এতে সনাতন ধর্মীয় দেবদেবীর মূর্তি-মুখোশ ঢুকিয়ে সংস্কৃতির নামে পূজা-অর্চনার পর্যায়ে নিয়ে গেছে তারাই পথভ্রষ্ট। তারা আমার জাতি এবং আমার ঈমানের শত্রু। তারা শয়তানের মিত্র।
আল্লাহ স্পষ্ট করে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা বাকারা ২:১৬৮)
বাংলা নববর্ষকে নিজেদের সদাচারী ও সাহসী পিতৃ পুরুষের হৃদয়ের বিশ্বাসের চেতনায় পালন করুন, শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ হতে দূরে থাকুন, নিজেদেরকে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করুন। অন্ধকার থেকে আলোর পথে হিজরত করুন, সত্যের পথে অবিচল থাকুন।
আজ যখন আমরা বাংলা নববর্ষ পালন করি, প্রকারান্তরে আমরা আমাদের মহানবী (সা:) এর হিজরত এর সেই পবিত্র মুহূর্তগুলোকেই স্মরণ করি। বাংলা নববর্ষ তাই আমার ঐতিহ্যের মোড়কে নবীজি (সা.) এর হিজরতের স্মারক, একে আমি কিছুতেই ভুলে যেতে দেব না। আমরা বলব, সত্য সমাগত, মিথ্যা দূরীভূত। নিশ্চয়ই মিথ্যার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী (আল কোরআন ১৭:৮১)
শুভ বাংলা নববর্ষ।