ফেরাউনদের দেশ যেমন মিশর, ঠিক তেমনী অসংখ্য নবী-রাসুল সাহাবা ওলী আউলিয়াদের দেশও মিশর। পবিত্র কোরআনে ‘মিশর’ শব্দটি পাঁচবার উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা অনেক নেয়ামত-অনুকম্পায় মিশরীয়দের সিক্ত করেছেন। নীল নদের পানির বরকতে মিশরের জমিন থাকে সব সময় উর্বর। তাই মিশরকে বলা হয় নীল নদের দান।
বিশ্বের প্রাচীন কৃষ্টি সভ্যতা সমৃদ্ধ এই দেশটিতে রোজা শুরু হয় বেশ ধূমধাম করেই। এদেশের প্রতিটি বাড়ি, রাস্তা ও দোকানে ফানুস জ্বালানো রমজানের সংস্কৃতি। দেশটির রাজধানী কায়রোর অলি গলির দোকান গুলো এখন বাহারি রঙের ফানুসে সয়লাব। রমজান শুরু হওয়ার আগে থেকেই দোকানিরা হরেক রকম ফানুস এনে সাজিয়েছেন দোকান। বিভিন্ন ডিজাইন ও রঙ বেরঙ এর ফানুসের রয়েছে অদ্ভুত দরনের যতসব বাহারি নাম। যেমন, আল- খামাসি, আবু শামা, আবু লাদ, আল-দালিয়াইয়া, আল-খুম্মাস, আল-বুর্জ, শামামা ইত্যাদি।
কায়রোর কুটনৈতিক এলাকার ৯ নাম্বার রোডের এক দোকানী বলেন, এখানে বিভিন্ন আকার এবং মাপের ফানুস রয়েছে, প্রকার ভেদে একেকটি ফানুসের দাম ১০ গিনি (৪০টাকা) থেকে ৩হাজার গিনি (১২হাজার টাকা)। তবে মধ্যে সাইজের ফানুস বিক্রি হচ্ছে বেশি, যার মূল্য ২০০ থেকে ৩০০ গিনি বা ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের রমজানে ফানুসের চাহিদা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে। কারন, গত বছরের তুলনায় এবছর ফানুস এর দাম ৫০% বেড়েছে।
কায়রো চেম্বার অফ কমার্সের স্টেশনারি ও শিশুদের খেলনা বিভাগের উপ-প্রধান বারাকাত সাফা বলেন, গত বছর প্রায় ৫মিলিয়ন ফানুস বাজারজাত করলেও এবছর ২মিলিয়ন কমিয়ে ৩মিলিয়ন ফানুস বাজারজাত করা হয়েছে। সাফা আরো বলেন, এ বছর মিশরীয় পাউন্ড এর বিপরীতে ডলারের উচ্চ মূল্যের কারনে ফানুসের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
উল্লেখযোগ্য যে, মিশর প্রতি বছর স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ও ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মধ্যেপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে প্রায় ২ লক্ষ রমজান ফানুস রপ্তানি করে। ক্ষুদ্র পুঁজি নিয়ে বেসরকারি খাতে স্থানীয় ভাবে ফানুস তৈরিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে মিশর।