Site icon World 24 News Network

নেপোলিয়নের মিশরে যাওয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ঘটনা !

মিশরীয় পিরামিডে নেপোলিয়ন কি ভূত দেখেছিলেন? ভয়াবহ সে রহস্যটি কি ছিল !?

নেপোলিয়ন ছিলেন একজন সাহসী মানুষ, ফ্রান্সের একজন প্রতিভাবান জেনারেল। ভয় জিনিসটা তার কমই ছিল l যুদ্ধের ময়দানে কোন শত্রুকে তিনি ভয় পাননি l কিন্তু মিশরীয় পিরামিডে এক বার রাত কাটাবার পর সেই সাহসী মানুষটিকে আতঙ্কিত হতে দেখেছিল সবাই l
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ১৭৯৮ সালে মিশর অভিযানের সময় প্রত্নতাত্ত্বিক সাইট গুলির উপর খুব মনোযোগ দেখিয়ে ছিলেন । সমসাময়িক অনেকের মতো তিনিও মিশরের ফেরাউনদের রহস্য এবং সে দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসে বেশ মুগ্ধ ছিলেন। এই কারণেই মিশরের ইতিহাস খুব ভালো ভাবে বুঝার জন্য তিনি তার ট্রুপের সাথে ভূমি গবেষণা প্রযুক্তিবিদ, সমীক্ষক, জ্যোতির্বিদ এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের নিয়ে গিয়েছিলেন।
এই বিশেষজ্ঞরা গিজার গ্রেট পিরামিড পরিমাপ এবং সমীক্ষা পরিচালনা করেন। পরবর্তী সময়ে এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, গবেষণালব্ধ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। মিশরের গোপন রহস্য উদঘাটনের জন্য তিনি নিজেও সক্রিয় ভাবে কাজ করেন l তিনি নিজেই পিরামিডের ভিতরের বস্তুগুলো খুব ভালোভাবে জানতে চেয়েছিলেন।
পিরামিডের রহস্য সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তিনি ‘কিংস চেম্বারে’ এক রাত কাটান l পরের দিন সকালে নেপোলিয়নের যখন পিরামিড থেকে বেরিয়ে এল তখন তার চোখে মুখে বেশ পরিবর্তন দেখা যায়। ভয়ে মুখ সাদা হয়ে গিয়েছিল তার l
নেপোলিয়নের অভিব্যক্তি দেখে তার একজন সহকারী জানতে চেয়েছিলেন, পিরামিডের ভিতরে কোনো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছিল কিনা। তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। পরবর্তী সময়েও এ সম্পর্কে তিনি কোনো কথা বলতে চান না সেটি স্পষ্ট সবাইকে জানিয়ে দেন । এই ঘটনার অনেক বছর পর নেপোলিয়ন যখন মৃত্যুশয্যায়, তখন তার এক বন্ধু তাকে সেই রাতের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি শুধু মাথা নেড়ে বললেন যে তিনি ঐ কথা মনে করতে চান না l
নেপোলিয়ন গিজার গ্রেট পিরামিডে সেই রাতে তার সঙ্গে কী ঘটেছিল তা কখনো কাউকে বলেননি বলে সেই রাতের ঘটে যাওয়া রহস্যময় ঘটনা নিয়ে এখনো অনেক জল্পনা কল্পনা রয়েছে। অনেক বলেন ‘কিংস চেম্বারে’ অবস্থানের সময় নেপোলিয়ন নিজের অবশ্যম্ভাবী ভবিষ্যতের দৃশ্য দেখেছিলেন। এই অবশ্যম্ভাবী পরিণতির কথা তিনি অন্য কোনো ব্যক্তিকে জানাতে চাননি।
পিরামিডের মধ্যে রহস্যময় ঘটনার অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হওয়া প্রথম কিংবা শেষ ব্যক্তি নয় নেপোলিয়ন। ১৯৩০ এর দশকে, ব্রিটিশ লেখক এবং সাংবাদিক পল ব্রান্টন ‘কিংস চেম্বারে’ এক রাত কাটান। পল ব্রান্টন তার বিখ্যাত ‘এ সার্চ ইন সিক্রেট ইজিপ্ট’ গ্রন্থে সেই রাতের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। ‘কিংস চেম্বার’ পুরোপুরি গ্রানাইট দিয়ে তৈরি। পল ব্রান্টন এই গ্রানাইট স্ল্যাবে মোমবাতি জ্বালিয়ে সারা রাত কাটান। নিস্তব্ধতার মধ্যে একমাত্র আলোর উৎস ছিল এই মোমবাতি।
এই গ্রন্থের বর্ণনা অনুযায়ী, রাত যত বাড়ছিল সেই সঙ্গে সেখানে কিছু ভয়ঙ্কর অনুভূতি সৃষ্টি হচ্ছিল। আতঙ্কগ্রস্ত হলেও তিনি স্থির ছিলেন। তিনি যা বর্ণনা করেছেন তাকে অ্যাল্ট্রাস প্রজেকশন বলা হয়। অ্যাল্ট্রাস প্রজেকশন হলো নিজের শরীর হতে আত্মা, ভূত বা অ্যাল্ট্রাস বডি আলাদা হওয়ার অনুভূতি। অ্যাল্ট্রাস প্রজেকশন সম্পর্কে সমালোচনা থাকলেও কিছু কিছু মানুষ এটি বিশ্বাস করেন।
গিজার গ্রেট পিরামিড মিশরের চতুর্থ রাজবংশের সময় খ্রিষ্টপূর্ব ২৫৮০ থেকে ২৫৬০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে নির্মিত হয়। এই পিরামিডের মধ্যে গোপন কক্ষ রয়েছে। অনেকে বিশ্বাস করেন পিরামিডের মধ্যে অতিপ্রাকৃত অনেক কিছুই ঘটে। তবে কেউই নিশ্চিত নয়, আসলে সেখানে কী ঘটে? যদিও বিজ্ঞানীরা সেখানে নানা বিষয়ে অনেক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন।
সাম্প্রতিক এক তত্ত্ব থেকে জানা যায়, পিরামিডের ভিতরের কক্ষগুলো কালো গ্রানাইট পাথরের তৈরি। কালো গ্রানাইট ব্লক থেকে নির্গত ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশনের কারণেই সেখানে একা থাকাকালীন সময় অনেকেরই গা ছমছমে ভাব হয়। তবে গিজার গ্রেট পিরামিডের ভিতরে ঘটে যাওয়া অদ্ভুত ঘটনাগুলোর ব্যাখ্যার অনেক তথ্য থাকলেও এর রহস্যগুলো আজো অমীমাংসিতই রয়ে গিয়েছে।
Exit mobile version