Site icon World 24 News Network

ঘরের বাসিন্দার জন্য তার ঘর নিরাপদ (পর্ব-৩)

একটু চিন্তা করুন তো, সেই দেড়হাজার বছর পূর্বে প্রিয়তম নবি মুহাম্মদ সা. বলে গেলেন, যে তার ঘরে অবস্থান করবে সে নিরাপদ। আজ আমাদের ঘর নিরাপত্তাহীন। রাতে ঘুমাতে পারে না। দোয়া-দরুদ পড়ে কাতরভাবে আল্লাহকেই বলে, পরোয়ারদেগার! আমাকে নিরাপত্তা দান করো। রাষ্ট্রের উদ্ভবই হয়েছে মানুষের নিরাপত্তা দানের লক্ষ্যে। কিন্তু কী দুর্ভাগ্য! মানুষ আজ আর রাষ্ট্রের কাছে নিরাপদ বোধ করে না। আজ ইউরোপ-আমেরিকা তাদের নাগরিকদের জান- মাল ও সম্মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। অথচ মুসলিম জাহানে নিজের দেশ ও নিজের বাড়িতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে।

মানুষের জান-মাল ও সম্মানের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে রসুলুল্লাহ সা. কত সতর্ক ছিলেন। কোনো মানুষ যাতে কোনভাবেই হেনস্থা না হয় সেজন্য তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়, মুমিন নয়, মুমিন নয় যার হাত ও মুখের অনিষ্ট হতে অন্যরা নিরাপদ নয়। কারো কথা আড়িপেতে শোনা বা কারো ঘরে উঁকিমারা তিনি নিষিদ্ধ করেছেন। ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে কেউ যদি কারো ঘরে তাকাই বা উঁকি মারে রসুলুল্লাহ সা. তার চোখ ফুটো করে দিতে বলেছেন। দুজন মানুষ কথা বলতে থাকলে সেখানে কারো পক্ষে তাদের কথা শোনার চেষ্টা করা অন্যায়। অর্থাৎ কারো চিঠি পড়া, মোবাইল দেখা ও কারো গোপনীয়তা ভঙ্গ করা ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে।

খলিফা ওমর রা.-এর শাসনামলে তিনি রাতে প্রজাদের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য বের হতেন। একদিন তিনি একটি ঘর থেকে গানের আওয়াজ শুনতে পান। তিনি দেয়ালের ওপর থেকে দেখেন যে সেখানে একজন মহিলা ও সাথে মদের পাত্র। খলিফা বলেন, হে আল্লাহর দুশমন! তুই কি মনে করেছিস অপরাধ করবি আর কেউ জানবে না?

লোকটি তাৎক্ষণিক বলে উঠে, হে আমিরুল মুমিনিন! তাড়াহুড়ো করবেন না। আমি অপরাধ একটি করলে আপনি করেছেন তিনটি। আল্লাহপাক সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে বলেছেন, অনুমতি গ্রহণ ও গৃহকর্তাকে সালাম দিয়ে প্রবেশ করতে বলেছেন; অথচ আপনি কিছুই করেননি। ওমর রা. লজ্জিত হয়ে ফিরে আসেন। এরই নাম মানবাধিকার।

Exit mobile version