মিশরে ঈদুল ফিতর উদযাপন
আফছার হোসাইন (কায়রো-মিশর থেকে)
দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর মুসলিম উম্মাহ মাঝে আনন্দের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মধ্যপ্রাচ্যে ও আরব আফ্রিকার অন্যান্য দেশের সাথে পিরামিড আর নীলনদের দেশ মিশরে উদযাপিত হয়েছে মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর।
শুক্রবার (২১ মে) ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মসজিদ থেকে ধ্বনি আসতে থাকে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’। ভোরের আলো ফুটার আগেই দেখা যায় নারী পুরুষ ও শিশুরা হাতে জায়নামাজ নিয়ে ছুটে চলছে মসজিদের দিকে। সূর্য উঠার ২০ মিনিট পরেই (ভোর ৫.৪৫ মিনিট) সব মসজিদ ও খোলা ময়দানে একযোগে একই সময়ে কোন প্রকার বিলম্ব না করে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের জামাত।
মিশরে আমাদের দেশের মতো ঈদের জামাতের জন্য আলাদা কোনো ঈদগাহ মাঠ নেই। ছোট বড় সব মসজিদের ভেতর, স্কুল, বিভিন্ন ক্লাব সংলগ্ন মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। দেশটির রাজধানী কায়রোর ইসলামিক কায়রোতে অবস্থিত অমর ইবনুল আস, ইমাম শাফী (রাঃ), আল-আজহার, সাঈয়েদীনা হুসাইন (রাঃ), সাঈদা জয়নব (রাঃ) মসজিদ সহ বেশ কয়েকটি বড় বড় মসজিদে দেশের দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা এসে যোগ দেয় ঈদের জামাতে। করোনা মহামারী প্রাদুর্ভাবের কারনে গত তিন বছর ঈদের বিভিন্ন মাঠে ঈদের জামাত পড়া বন্ধ থাকলেও এবার সব কয়টি মাঠ নামাজ আদায়ের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে মিশর সরকার।
পিরামিডের দেশটিতে এবার ঈদের চার দিনের ছুটির সাথে যোগ হয়েছে সা’মে- নাসিম, সরকারের নির্বাহী আদেশ, সিনাই দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে দশদিন ছুটি। এবার ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বেশ কিছু বন্দিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।
নীলনদের দেশ মিশরে ঈদুল ফিতরের অন্যতম একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো কা’হক নামক জনপ্রিয় একটি কুকিজ জাতীয় মিষ্টি। ভিতরে খেজুর, ওয়ালনাট সহ বিভিন্ন বাদাম ভরে জেবদা (মাখন) ও ময়দা সংমিশ্রণে তৈরি কা’হক ছাড়া মিশরীয়দের ঘরে ঈদ উদযাপন চিন্তাই করা যায়না। দেশটিতে ঈদুল ফিতরের প্রধান খাবার ফাসিখ (লবনাক্ত সুটকি মাছ) বাছাল আখদার (পেঁয়াজ পাতা) ও এইস বেলাদি (স্থানীয় রুটি)।
মিশরে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় মসজিদ ও মাঠে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশি ও মিশরীয় নাগরিকসহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটিতে বাংলাদেশর রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি দেশে অবস্থিত প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদেরও শুভেচ্ছা জানান।