গাজাবাসীদের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে বাংলাদেশিরা
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মানবিক সংস্থা 'মাই ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন'
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই ফিলিস্তিনের গাজায় পানির সংকট এতটাই বেশি ছিল যে গাজাবাসী দীর্ঘদিন ধরেই তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিন যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন তা পাচ্ছিল না। প্রত্যেক ইসরায়েলি যেখানে প্রতিদিন ২৪০ থেকে ৩০০ লিটার পানি ব্যবহার করে, সেখানে গাজাবাসী প্রতিদিন পানি ব্যবহার করছে মাত্র ৮৩ দশমিক ১ লিটার।
ভূমধ্যসাগরের উপকূল রেখা বরাবর ইসরায়েল থেকে শুরু করে গাজা হয়ে মিশরের সিনাই উপত্যকা পর্যন্ত টানা একটি অ্যাকুইফার বেসিন রয়েছে। কিন্তু চাইলেই এই অ্যাকুইফারের পানি ব্যবহার করা যায় না। কারণ, গাজাবাসীর একমাত্র পানির উৎস হওয়ায় এখান থেকে যে পরিমাণ পানি উত্তোলন করা হয়, বৃষ্টির পানি সেই পরিমাণ পানি অ্যাকুইফারে দিতে পারে না।
এই অ্যাকুইফার থেকে ওঠানো ৯৬ দশমিক ২ শতাংশ পানিই পানের অযোগ্য। সব মিলিয়ে ৯৭ শতাংশ গাজাবাসীকে সুপেয় পানির জন্য ছোট আকারে পানির ট্যাংকারের ওপর নির্ভর করতে হয়।
এদিকে জায়োনিস্টদের বর্বর হামলার শিকার হয়ে গাজার কেন্দ্রীয় অঞ্চল ছেড়ে লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনি শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নিয়েছে খান ইউনিসের শরনার্থী শিবিরে।
এসকল শরনার্থী শিবিরে হাজার হাজার ফিলিস্তিনির জন্য সুপ্যায় পানি সরবরাহ করতে এগিয়ে আসলো মিশরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মানবিক সংস্থা ‘মাই ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’। MYDO আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত একটি Youth Development organization। যারা বর্তমানে ফিলিস্তিন এর অসহায় মানুষদের জন্য সহায়তা প্রদান করছে।
সংগঠনটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম সাকিব মিশরে আরটিভির প্রতিনিদিকে জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যাক্তিগত ভাবে পাঠানো আর্থিক অনুদান দিয়ে ‘মাই ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন’ এর ব্যানারে আমরা খান ইউনূসে শরনার্থী শিবির গুলোতে আশ্রয় নেওয়া অসহায় ফিলিস্তিনিদের নিকট বিশুদ্ধ সুপ্যায় পানি সরবরাহ করছি।
তীব্র এই গরমে তারা আমাদেরকে পানি সংকটের কথা জানালে আমরা তাদের সাহায্য করার উদ্যোগ নেই। গাজা উপত্যকার দেইর আল বালাহ থেকে ওয়াটার ট্যাঙ্ক দিয়ে প্রতিদিন ৫ হাজার লিটার বিশুদ্ধ সুপ্যায় পানি কিনে ৪০০ এর অধিক শরনার্থী পরিবারের কাছে বন্টন করি।
তিনি আরো জানান, ইতিপূর্বে আমরা গাজার শাহাদা আল-আকসা ও দেইর আল বালাহ’রের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা রোগী এবং তাদের স্বজনদের নিকট প্রায় ৪হাজার মানুষের কাছে খাবার সরবরাহ করেছি এবং কুরবানী ঈদের সময়ে যুদ্ধাবস্থায় মিশরে আশ্রয় নেওয়া ১৫০টি ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারের কাছে কুরবানীর মাংস ও ফুডবক্স বিতরন করেছি।
এছাড়াও কায়রোতে আশ্রয় নেওয়া অসুস্থ ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছি। আমাদের এই সহযোগিতায চলমান থাকবে। আমরা সামনে আবারও খাদ্য বিতরন, তাঁবু ও টয়লেট সহ মসজিদ নির্মাণের কর্মসূচী হাতে নিয়েছি।