মিসর-বাংলাদেশ শিক্ষা চুক্তির নবায়ন

বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত মোঃ মনিরুল ইসলাম গত ৯ই আগস্ট ২০২১ইং মিশরের উচ্চ শিক্ষা ও বিজ্ঞান গবেষণা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ডঃ খালেদ আবদুল গাফফারের সাথে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাত করেন। মাননীয় মন্ত্রী মান্যবর রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এবং রাষ্ট্রদূতকে তাঁর অফিসে পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত মহোদয় মাননীয় মন্ত্রীকে তাঁর আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আলোচনা শুরু করেন। প্রথমেই চলমান কোভিড মহামারী পরিস্থিতিতে শিক্ষা খাত পরিচালনায় মন্ত্রণালয়ের দক্ষতা ও কৌশল জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ও মিশরের মধ্যে যে ঘনিষ্ঠ ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে তার প্রশংসা করেছেন।

মাননীয় মন্ত্রী মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশনায় মিসর সরকার কিভাবে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কার্যকরভাবে পরিচালনা করছেন এর একটি সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং দিয়েছেন। যারফলে শিক্ষার্থীরা কমপক্ষে তাদের পরীক্ষাগুলি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছেন।

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানোর অনুরোধ করেন। মন্ত্রী উত্তরে বলেন, বাংলাদেশ ও মিশরের মধ্যে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত শিক্ষা বিনিময়ের একটি সমঝোতা স্মারক হয়েছিল, যেটি ২০১৫ সালে মেয়াদোত্তীর্ন হয়ে গেছে। রাষ্ট্রদূত অবিলম্বে পুরনো চুক্তিটি নবায়ন করার পরামর্শ দেন। তিনি আরও জানান যে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং মিশরের বিশ্ববিদ্যালয় সুপ্রিম কাউন্সিলের মধ্যে সহযোগিতার জন্য আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। মন্ত্রী উত্তরে বলেনঃ উভয় দেশের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বিজ্ঞানীদের মাঝে বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানো ও বিবিধ সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে চুক্তি দুটি স্বাক্ষরের জন্য উভয় দেশের কাজ করা উচিত।

মাননীয় মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, মিশরে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১২টি বড় গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে, তাই তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে, শিক্ষা বিনিময়টিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণাও অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত। তিনি আরও বলেন, মিশর ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ‘ইসলামি শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংগঠন’ (ইসেসকো) এর পরবর্তী সভা আয়োজন করবে এবং সে জন্য বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমন্ত্রণ পাঠানো হবে। তাঁর পরামর্শ হল, সে সময়েই ‘এমওইউ’টি স্বাক্ষর করার উপযুক্ত সময়।

রাষ্ট্রদূত আরও উল্লেখ করেছেন যে, আমাদের দুই দেশের মধ্যে ডিগ্রিগুলোর সমমান থাকা উচিত, এতে তিনি সম্মত হয়েছেন এবং কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উচ্চ শিক্ষা খাতে বিশেষ করে চিকিৎসা, আইসিটি, কৃষি, পর্যটন এবং নার্সিংয়ের ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার জন্য জিজ্ঞাসা করেন। মন্ত্রী উল্লেখ করেছেন “স্টাডি ইন ইজিপ্ট” নামে একটি উদ্যোগ রয়েছে, যা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদেরকে মিশরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জানতে ও ভর্তি হতে সাহায্য করবে।

মান্যবর রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য মাননীয় মন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান এবং আশ্বাস দেন যে, বাংলাদেশ দূতাবাস যেকোনো সময়ে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করবে। এই সুযোগে রাষ্ট্রদূতও মাননীয় মন্ত্রীকে তাঁর সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। মিসরীয় মন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে উপহার পেয়ে খুশি হন এবং আগামী দিনগুলোতে আরও সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব এবং মন্ত্রণালয়ের সাংস্কৃতিক মিশনের প্রধান উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র
বাংলাদেশ দূতাবাস কায়রো

ঈসা আহমাদ ইসহাক

সহযোগী সম্পাদক : নিউজ বিভাগ এবং প্রধান অনুবাদক: আরবী বিভাগ

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button