পিরামিড নীলনদ আর তিন ধর্মের ঐতিহাসিক দেশ মিশর। আফ্রো-এশিয়ার ইসলামিক ঐতিহ্যবাহী এই দেশটিতে করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর অত্যন্ত সীমিত আকার ও কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই ঈদ উদযাপন করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।
এবার করোনার সংক্রমণ কমে যাওয়ায় আনন্দ উচ্ছ্বাসে ঈদুল ফেতররের নামাজ আদায় করছেন মিশরবাসী।
আজ ২ই মে ২০২২ (রোজ সোমবার) ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মসজিদ থেকে ধ্বনি আসতে থাকে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’।
ভোরের আলো ফুটার আগেই দেখা যায় নারী পুরুষ ও শিশুরা হাতে জায়নামাজ নিয়ে ছুটে চলছে মসজিদের দিকে। সূর্য উঠার ২০ মিনিট পরেই মসজিদে ঈদের জামাত শুরু হয়।
মিশরে আমাদের দেশের মত ঈদের জামাত এর জন্য কোন ঈদগাহ মাঠ নেই। তবে করোনা মহামারির আগে মসজিদের ভিতর, স্কুল, বিভিন্ন ক্লাব সংলগ্ন মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হত। গত দুই বছরের ন্যায় এবার খোলা মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়া নিষিদ্ধ ছিল মিশরের ওয়াকফ মন্ত্রণালয় থেকে। তাদের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী ঐতিহাসিক মসজিদ আল- আযহার ও আমর ইবনুল -আস, সহ প্রধান মসজিদ গুলোতে একীভূত খুতবা দিয়ে নামাজ শেষ করা হয়।
এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এক সাংবাদিকসহ তিন হাজারের বেশি বন্দিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।
মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম ও দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় মসজিদে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
অনন্য বছরের ন্যায় এবার ও রাজধানী কায়রোস্থ ঘারানা ফার্ম এলাকায় অবস্থিত ‘বাংলাদেশ হাউজ’ প্রবাসীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ দুতাবাসের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম। দুপর ১.৩০ মিনিটে বাংলাদেশ হাউজে আগত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের অভ্যর্থনা জানান রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম ও তার সহধর্মিনী মিসেস ফাহিমা তাহসিন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের আপ্যায়ন এর জন্য মিসেস ফাহিমা তাহসিন নিজ হাতে তৈরী করেন বিভিন্ন ধরনের হালোয়া, খেজুরের সন্দেশ, বিভিন্ন রকমের সেমাই সহ দেশীয় ঐতিহ্যবাহী ঈদের সব রকমারি খাবার। দুপুর ১.৩০ মিনিট থেকে ৪.৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রবাসীদের নিয়ে গল্প গুজব ও আপ্যায়নে মেতে ছিলেন রাষ্ট্রদূত দম্পতি।
এসময় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশী ও মিসরীয় নাগরিক সহ সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি দেশে অবস্থিত প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদেরও শুভেচ্ছা জানান।
বাংলাদেশ দুতাবাস ভবনের ‘অপেন হাউজ’ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মিসররে বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতৃবৃন্দ, আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশী উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিবর্গরা।