বেশ কয়েক সপ্তাহ যাবত ভোগান্তিতে রয়েছে বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের বন্যাকবলিত মানুষ। চলমান এ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলোর মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম অন্যতম। মানবতার এ ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে বেসরকারি সেবা সংস্থাগুলোর তৎপরতা সিলেট – সুনামগঞ্জের তুলনায় কুড়িগ্রামে কিছুটা কমই পরিলক্ষিত হয়েছে।
কুড়িগ্রামের সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রক্ষপুত্র নদীর পানি বিপদসীমার উপরে উঠার মাধ্যমে সূচিত হওয়া এ বন্যায় কুড়িগ্রাম জেলার ৪৯ টি ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক অঞ্চলের অন্তত আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্ধী হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় ৩২৫ টিরও অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে যাদের ঘর – বাড়ি প্লাবিত হয়েছে এমন অনেকে নৌকায় অবস্থান নিতেও বাধ্য হয়।
বর্তমানে এ অঞ্চলের নদ – নদির পানি হ্রাস পাওয়ায় কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটলেও নিম্নাঞ্চলের মানুষের ভোগ রয়েই গিয়েছে। পানি নামার সাথে সাথে নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তিতে আছে কুড়িগ্রামের মানুষ…। এভাবেই বন্যাকবলিত কুড়িগ্রামবাসীর ভোগান্তির কথা বর্ণনা করছিলেন মাঠ পর্যায়ে সেবারত আলোর কাফেলা ইসলামী যুব সমাজের সভাপতি মুফতী আবুল কালাম আজাদ।
আলোর কাফেলা ইসলামী যুব সমাজ শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ মানবতার ডাকে সারা দিয়ে কুাড়িগ্রামের বানভাসি মানুষের সেবায় শুরু থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে আলোর কাফেলার চৌদ্দ সদস্য বিশিষ্ট একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম কুড়িগ্রামে রয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবক টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন, সংগঠনটির সভাপতি মুফতী আবুল কালাম আজাদ। সাথে রয়েছেন- মাওলানা মুস্তফা কামাল (সহ-সভাপতি), মুফতী মুহাম্মাদ আলী (সেক্রেটারী), আবদুল কাইয়্যুম (সাংগঠনিক সম্পাদক), মুফতী মামুন বিন আব্দুর রহমান, মুফতী ইবরাহীম, মুফতী আলাউদ্দিন মাহমুদ ও হাফেজ নুর হুসাইনসহ সংগঠনটির নেতৃবর্গ ও সদস্যবৃন্দ। আলোর কাফেলার স্বেচ্ছাসেবক টিমের বর্তমান কর্মক্ষেত্র কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ, যাত্রাপুর ও ঘুঘু মুন্সীর চরসহ আশপাশের বন্যা কবলিত এলাকাসমূহ।
“আলোর কাফেলা ইসলামী যুব সমাজ “ মূলতঃ মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কওমী – আলিয়া ও স্কুল – কলেজসহ স্থানীয় সর্বশ্রেণীর যুব সমাজের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেসরকারি সামাজিক সংগঠন। “শিক্ষা, ঐক্য ও সেবা” এ তিনটি মৌলিক উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে ২০১৭ সালের শেষ দিকে সংগঠনটির আত্নপ্রকাশ। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পীর সাহেব মধুপুর মাওলানা আব্দুল হামীদ দা. বা. এর তত্ত্বাধানে মুফতী আবুল কালাম আজাদকে সভাপতি, মুফতী মুহাম্মাদ আলীকে সেক্রেটারী ও মাওলানা গাজী আবদুর রহমানকে সাংগঠনিক সম্পদক মনোনীত করে ১৮ সদস্যের কার্যকরী পরিষদ গঠন করার মাধ্যমে “আলোর কাফেলা ইসলামী যুব সমাজ” এর মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু হয়।
গঠনকাল থেকেই সংগঠনটি প্রতি বছরই বিভিন্ন দ্বীনি কনফারেন্স, মাহফিল, ইসলাহী মজলিস, হিফজুল কুরআন, কেরাত ও ইসলামী সংগিতসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সাময়িকী প্রকাশ, স্থানীয় কৃতি শিক্ষার্থীদের মেধামূল্যয়ন পুরস্কার, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ মূলক কর্মশালার আয়োজন ও গরীব – দুঃখীদের আর্থিক সহযোগিতাসহ বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে এ কাফেলা নিজেদের সাধ্যানুয়ী ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ নিয়ে বানভাসি কুড়িগ্রামবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছে।