আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী উল্লেখ করে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া হবে না। আমি শুধু এইটুকু চাই- যারা ষড়যন্ত্রকারী, চক্রান্তকারী, যে উদ্দেশ্য নিয়ে জাতির পিতাকে ১৫ আগস্ট হত্যা করেছে তাদের উদ্দেশ্য তো ছিল বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানো, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন ব্যর্থ হোক, স্বাধীনতার আদর্শ ধ্বংস হয়ে যাক, সেটাই করতে দেব না।
আজ বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ইতিহাস বিকৃত করেছিল। আমার দেখা নয়া চীন, কারাগারের রোজনামচা, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, ১৪ খণ্ডে এসবের গোয়েন্দা রিপোর্ট থেকেই সত্যিকারের রিপোর্ট বের হয়ে আসছে।
তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বে কখনো বিশ্বাস করতেন না। তাকে ধরে এনে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্র পাঠ করানো হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরও জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান যে কোথায় যুদ্ধ করেছেন এমন ইতিহাস কোনো দিন শোনা যায়নি। আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়েছেন। বিভিন্ন ফিল্ডে যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু তার সেই ধরনের কোনো ইতিহাস নেই। আমাদের চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের এমপি মোশাররফ সাহেব আছেন। তিনি সরাসরি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিলেন। তারা কিন্তু তার নাম দিয়েছিল ’মিস্টার রিট্টিট’। ওনাদের কাছে গল্প শুনেছি, যেখানেই যুদ্ধ লাগত তার চেয়ে অন্তত তিন মাইল দূরে থাকত জিয়াউর রহমান। সে কখনো অস্ত্র হাতে সামনা-সামনি যুদ্ধ করেনি। তাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল কিছুদিনের জন্য।
তিনি বলেন, খন্দকার মোশতাক দোসর হিসেবে পেয়েছিল জিয়াউর রহমানকে। জিয়া ছিল মোশতাকের মূল শক্তির উৎস। কারণ ক্ষমতা দখল ও হত্যাকাণ্ড চালানোর জন্য সামরিক বাহিনীর সহযোগিতা তার দরকার। সেই মোশতাক ও জিয়া মিলেই কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার এই চক্রান্তটা করেছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, মোশতাক জিয়ার ওপর নির্ভর করে রাষ্ট্রপতি হয়েছিল। কিন্তু সে কত দিন থাকতে পেরেছিল? থাকতে কিন্তু পারেনি। মীর জাফরও পারেনি। কারণ বেঈমানদের ব্যবহার করে সবাই। তাদের বিশ্বাস করে না, রাখে না। জিয়াউর রহমান সেই কাজটাই করেছিল।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাদের খান, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল ও উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন ও উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা। সভা পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।