ভুল করা মানবপ্রকৃতি কিন্তু ভুলকে স্বীকার না করে তার উপর অনড় হয়ে থাকা শয়তানের স্বভাব। শয়তান সব সময় প্ররোচিত করে, ভুল স্বীকার করা দুর্বলতা, তাই ভুল স্বীকারে বাধা প্রদান করে।
শয়তান জাহান্নামে যাওয়ার পথে তার সঙ্গী-সাথী বাড়াতে চায়। আর শয়তানকে যে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে সে মূলত নিকৃষ্ট বন্ধুই পেয়ে থাকে। শয়তানকে সবাই ঘৃণা করে। মানুষের আচার-আচরণ ও কাজে- কর্মে আল্লাহর নাফরমানি করাকেই বলা হয় শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ। আল্লাহর বাণী, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাগুতকে অস্বীকার করো।
এই আয়াতে আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের আশার বাণী শুনিয়েছেন, কেউ যদি তার জীবন থেকে মন্দ পরিহার করে ভালো কাজ করতে পারে তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করার নিশ্চয়তা দান করেছেন। এই ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত থাকার কারণে আল্লাহর অগণিত বান্দা পাপাচার পরিহার করে সুন্দর জীবনে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছে। তওবা অর্থ প্রত্যাবর্তন করা। অর্থাৎ অসৎ পথ থেকে সৎ পথে ফিরে আসা।
আমাদের জীবনটা বড়ো অনিশ্চিত। যেকোনো সময় মৃত্যুর ডাক আসতে পারে। এখানে বয়স, পদমর্যাদা কোনো কিছুই বিবেচ্য নয়। আল্লাহর সাথে প্রত্যক্ষ নাফরানি নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত এখন থেকে শুরু করলেই ইনশা-আল্লাহ ক্ষমা পাওয়া যাবে। কিন্তু বান্দার হক নষ্ট ও অসদাচরণ বান্দার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে পরিশুদ্ধ জীবন-যাপনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
অন্যায়-অবিচার ও ঘুষ-দুর্নীতির ফিরিস্তি অনেক দীর্ঘ। হ্যাঁ, হতাশ হওয়ারই কথা। অবশ্য আল্লাহ তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হতে নিষেধ করেছেন। সব বিষয় আল্লাহর উপর সোপর্দ করে উপলব্ধিতে আসার সাথে সাথে বান্দার উচিত তওবা করা। অর্থাৎ সকল অন্যায়- অবিচার থেকে ফিরে আসা। এই সিদ্ধান্ত নিতে পারলে বান্দার ইমানই বলে দিবে তাকে কী করতে হবে? আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন, পাপকে নেকিতে পরিবর্তন করে দিবেন। অর্থাৎ অন্যায় করার কথা যতবার স্মরণ হবে ততবার লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়াটাই বান্দার জন্য নেকি। সে এমনভাবে তওবা করে যাতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে আখেরাতে তার পাওনাদারদের নিজ থেকেই প্রদান করবেন। অসম্ভব কিছু নয়।
আমাদের উচিৎ, এই ক্ষুদ্র জীবনে আর অপেক্ষা না করে দ্রুত আল্লাহর সকল নাফরমানি পরিহার করে তাঁর অনুগত বান্দা হয়ে যাওয়া এবং তাঁর দয়া, অনুগ্রহ ও ক্ষমার সুযোগ গ্রহণ করা। আল্লাহপাক আমাদের তাঁর ক্ষমা লাভের সুযোগ দান করুন। আমিন।