মানুষের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হয় বা মানুষ অপরাধপ্রবণ হয় এমন সকল কর্মকাণ্ড ইসলামে নিষিদ্ধ। অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য মাদক অন্যতম হাতিয়ার। নেশা উদ্রেগকারী সবকিছু ইসলাম হারাম ঘোষণা করেছে এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই (অর্থাৎ বিক্রেতা, পরিবেশনকারী ও পানকারী) গুনাহের ব্যাপারে সবাই সমান। জেনা-ব্যাভিচার রোখার জন্য ইসলাম পর্দা ফরজ করে দিয়েছে। পর্দা অনুসরণ করে চললে আর পরকীয়ায় পেয়ে বসে না।
জননিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হয় এমন সকল তৎপরতা-গিবত ও পরনিন্দা, ওজনে কম-বেশি করা, ভেজাল দেয়া, ধোকা-প্রতারণা করা, জুয়া, মিথ্যা কসম খাওয়া, মানুষকে গালি দেয়া ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, অপরের অধিকার হরণ সবই বড় বড় (কবিরা) গুনাহের নামান্তর। এ সব অপরাধ থেকে দূরে থাকার জন্য ইসলাম নানাভাবে অনুসারীদের অনুপ্রাণিত করেছে।
ইসলাম শব্দগত অর্থে ‘আনুগত্য’ ও ভাবগত অর্থে ‘শান্তি’। মূলত আল্লাহপাকের আনুগত্যের মধ্যেই রয়েছে শান্তি। আর এক অর্থ আনুগত্য এবং মুসলিম অর্থ অনুগত। আল্লাহপাকের এক গুণবাচক নাম মু’মিন যার অর্থ নিরাপত্তাদাতা। বিশ্বাসী বান্দার কাছে আল্লাহর সকল সৃষ্টিই নিরাপদ। সমগ্র সৃষ্টির কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যেই মুসলিম জাতির আবির্ভাব। আল্লাহর ভাষায়- ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠতম উম্মত, তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানব জাতির কল্যাণের জন্য; তোমরা সৎ কাজের আদেশ দান করো এবং অসৎ কাজে নিষেধ করো’।
আল্লাহপাক মুসলমানদেরকে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের আসনে দেখতে চান যাতে সমাজ থেকে সকল অনাচার দূর করে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করতে পারে। সকল নবি-রসুল প্রেরণের উদ্দেশ্যও তাই। সমাজের কর্তৃত্ব অসৎ মানুষের হাতে থাকায় সমাজে এতো অশান্তি ও জুলুম-নির্যাতন। আল্লাহপাক মানুষকে তাঁর প্রতিনিধির (খলিফা) মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছেন।
তাই ব্যক্তিগত জীবনে নির্দিষ্ট আচার- অনুষ্ঠানের মধ্যে নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ না রেখে সমগ্র সৃষ্টিকে আল্লাহর আনুগত্যের মধ্যে নিয়ে আসার প্রচেষ্টাই হলো খলিফার দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহপাক শক্তি-সাহস দান করুন। আমিন।