মিসরের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে Samaa International Festival for Spiritual Music & Chanting। শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী এই বিশাল আয়োজনে মিসরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি সাংস্কৃতিক দল সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি দূর্গে অবস্থিত সুসজ্জিত উম্মুক্ত মঞ্চে আধ্যাত্মিক সংগীত পরিবেশন করে।
’দে দে পাল তুলে দে মাঝি হেলা করিস না, ছেড়ে দে নৌকা আমি যাবো মদিনা’ গানটি পরিবেশনের সময় দর্শক সারিতে বসা হাজার হাজার দর্শক করতালি দিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ে। এ সময় উপস্থিত প্রবাসীদের কন্ঠেও গাইতে দেখা যায়, দে দে পাল তুলে দে —–। বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগ ও সার্বিক সহযোগিতায় উৎসবে অংশ নেয় মিসরে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মোট ৭ জন কন্ঠশিল্পী ও বাদক দল।
বাংলাদেশ ও মিসরের মধ্যকার সাংস্কৃতিক চুক্তির আওতায় ১৪তম আন্তর্জাতিক সুফি উৎসবে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক দলটি ১৯শে সেপ্টেম্বর বর্ণাঢ্য এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও অংশ নেয়। বাংলাদেশ ছাড়াও জর্ডান, রোমানিয়া, ফ্রান্স, গ্রীস, তিউনিসিয়া, সুদান, পাকিস্তান, সিরিয়া, স্পেন, ইন্দোনেশিয়া, সার্বিয়া, দক্ষিণ সুদান, লেবানন, ইয়েমেন, ফিলিস্তিনসহ সুফি উৎসবে অংশগ্রহণ করে মিসরের বিভিন্ন গায়ক ও বাদক দল। ইতিপূর্বে গত ১৪-বছরে কায়রোর এই উৎসবে সর্বমোট ২০০-দেশ অংশগ্রহণ করেছে। বিমুগ্ধ অনেক দর্শক ও সাধক সামা উৎসবকে ”ধরণীতে স্বর্গের ছায়া” হিসাবে অভিহিত করেছেন।
আন্তর্জাতিক সুফি উৎসবে অংশ নেওয়া বাংলাদেশী শিল্পীরা হচ্ছেন আনিশা মেহনাজ, আরিফুল হক, ফায়জুল ইসলাম, হেলাল কাজী, সোহেল আহমেদ ও দেলোয়ার হোসেন। বাংলাদেশী বাদ্যযন্ত্রের মধ্যে ছিল ঢোল, তবলা, হারমোনিয়াম, মন্দিরা, একতারা, জিপসি ও ধৌপ। মিসরে নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মনিরুল ইসলাম বলেন, করোনার প্রকোপ ও সময় স্বল্পতার জন্য এবার বাংলাদেশ থেকে কোনো সাংস্কৃতিক দল কায়রো আন্তর্জাতিক সুফি উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। সেজন্য আমরা নিজেরাই অত্যন্ত উদ্যম, উদ্যোগ ও সাহসিকতার সমন্বয়ে এখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে এই সুফি উৎসবে যোগদান করেছি। তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বে সংঘাতের বিপরীতে সংলাপ, সহাবস্থান ও সহমর্মিতা প্রতিষ্ঠার জন্য এখানে শান্তির প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়েছে। ভাবগম্ভীর পরিবেশে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক সঙ্গীতের মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে শান্তির জন্য প্রার্থনা করতে আমরা বিভিন্ন দেশের মানুষ একত্রে সমবেত হয়েছি। আর এই মহতী আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ই হলোঃ Together We Pray, Together We Change the World।
মিসরের সাংস্কৃতি বিষয়ক এবং পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রীদ্বয় বিমোহিত দর্শকদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে বাংলাদেশ দূতাবাসকে সাগ্রহে অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং একটি স্বীকৃতি ও প্রশংসামূলক সার্টিফিকেট প্রদান করেন। উৎসবের প্রধান পরিচালক ডঃ ইনতেসার আবদেল-ফাত্তাহ অপেশাদার বাংলাদেশী শিল্পীদের পরিবেশনাকে উচ্ছসিত প্রশংসা করেন।