বাংলা নববর্ষে ঢাকা টু কায়রো সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা
ইজিপ্ট এয়ার ও আলো ঢাকা এভিয়েশনের মাঝে যৌথ সংযোগ স্থাপন সুসম্পন্ন
মিশর প্রবাসীদের জন্য সত্যি একটি আনন্দের সংবাদ যদি তা কর্তৃপক্ষ যথাযথ ভাবে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন। গত রাতে মিশরের যে কয়েকটি বিখ্যাত হোটেল আছে তার মধ্যে হোটেল শেরাটন একটি। আর সেখানেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাঙালির প্রাণের উৎসব বাঙলা নববর্ষ।
আর বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে মিশরে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম এবং আলো এভিয়েশনের সিইও সাঈদ আলী শামি প্রবাসীদের এই সুখবরটি ঘোষণা করতে দেরি করলেন না। যদিও বিষয়টি নিয়ে সবার মুখে মুখে আলোচনা ছিল। অনুষ্ঠানের আয়োজন টি ছিল বেশ জমকালো। সেখানে শুরুতে রাষ্ট্রপতির বাণী পাঠ করে শোনান মান্যবর রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম।
তারপরই শুরু হয় আয়োজনের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিশর ট্যুরিজমের উপমন্ত্রী গাদা আল শালাবী। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কমিউনিটি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী ও শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিশরের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।
সেখানে দূতাবাসের একদল সংস্কৃতি কর্মীর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন উপস্থিত সবাই কে মুগ্ধ করে। একপর্যায়ে বাংলাদেশে ইজিপ্ট ইয়ারের সিইও এবং বাংলাদেশ আলো এভিয়েশনের ব্যবপস্থাপনা পরিচালক সাঈদ আলী সামী তার বক্তব্যে বলেন সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। আজকের এই ঐতিহাসিক দিনটিতে আপনাদের আনন্দের সংবাদটি দিতে পেরে সত্যিই আমরা গর্বিত। মিশর প্রবাসীদের দীর্ঘ দিনের একটি দাবি পূরণ হচ্ছে। আমরাও চাই মিশরের সাথে আমাদের সম্পর্ক আরো গভীর হোক। তাছাড়া আমি এবং আমার কোম্পানি সবসময় দেশের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি।
কিভাবে দেশের পর্যটন ও এভিয়েশন খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তারই অংশ হিসেবে আজকে আমরা ঢাকা টু কায়রো সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। ঈদুল ফিতরের পরই আমরা ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবো বলে আশা করছি। তাছাড়া আমরা কানেক্টিং ফ্লাইট হিসেবে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, টরেন্টো, ফ্রান্স, ও ইতালি ছাড়াও আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশকে সংযুক্ত করতে সক্ষম হবো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিশর ট্যুরিজমের ভাইস মিনিস্টার গাদা আল শালাবী ইংরেজিতে সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। স্বাধীনতার পর থেকে মিশর বাংলাদেশের অটুট সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেনঃ আমরা চেষ্টা করছি বাংলাদেশের সাথে শুধু ফ্লাইট পরিচালনা নয় কিভাবে সাংস্কৃতিক বিনিময় আরও বাড়ানো যায়, এ নিয়েও আমরা কাজ করছি। আজকে আমি অনেক আনন্দিত আপনাদের চমৎকার নববর্ষের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে। আবারো ধন্যবাদ সবাইকে।
সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম জানান, প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের লালিত একটি স্বপ্ন যা পূরন করতে পেরে সত্যি অন্যরকম একটা অনুভুতি কাজ করছে। এর মাধ্যমে মিশর বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো একধাপ এগিয়ে গেলো। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের এভিয়েশন ও পর্যটন খাতে বিদেশি পর্যটকদের আরো আকর্ষণ করতে সম্ভব হবো; সময় এবং অর্থ দুটোই বাঁচবে। রাষ্ট্রদূত বলেন প্রবাসী এবং ছাত্রছাত্রীরা মাত্র সাতশ ডলার এবং সাড়ে ছয় ঘন্টা ছাড়াও ইজিপ্ট এয়ারের পক্ষ থেকে আরো সুযোগ সুবিধা পাবেন।
রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের পর তার নেতৃত্বে এক শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়। হোটেল শেরাটনে এই শোভাযাত্রা দেখে উপস্থিত অতিথিরা সবাই আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েন। যা এর পূর্বে তারা দেখেনি এবং বাংলাদেশী এই শোভাযাত্রার ভূয়সি প্রশংসা করেন বিদেশি অতিথিবৃন্দ।
বর্ষ বরণের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিদেশি এবং দেশী মেহমানদের জন্য বাঙালি বাহারী রকমের খাবার পরিবেশন করা হয় । অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে ইজিপ্ট এয়ারের প্রতিনিধি ওসামা হুদা, রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলা এবং ভাইস মিনিস্টার গাদা আল শালাবী কেক কাটার মাধ্যমে ফ্লাইট পরিচালনা এবং এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
নববর্ষের এই অনুষ্ঠান উপভোগ করে আগত অতিথিরা বাংলাদেশের ভূয়সি প্রশংসা করেন।