টেক্সটাইল শিল্পে রপ্তানি দ্বিগুণ করতে ভারতের নতুন কৌশল
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন
- ২০১৯ সালে রপ্তানি আয় ছিল ৩৬০০ কোটি ডলার, ২০২৬ সালে ৬৫০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্য
টেক্সটাইল (বস্ত্র) শিল্পে চীনের পাশাপাশি অন্যতম সফল দেশ ভারত। কিন্তু কয়েক বছর ধরে এ খাতের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালে ভারতের টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি কমেছে ৩ শতাংশ এবং ২০২০ সালে রপ্তানি কমেছে ১৮.৭ শতাংশ। অথচ একই সময়ে বাংলাদেশ-ভিয়েতনামের মতো কম মূল্যের দেশগুলো ভালো ব্যবসা করেছে।
এ অবস্থায় টেক্সটাইল শিল্পের পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে দেশটির সরকার ও উদ্যোক্তাদের। ২০১৯ সালে টেক্সটাইল খাত থেকে দেশটির রপ্তানি আয় ছিল তিন হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
এ বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ কিছু সমস্যার কারণে পিছিয়ে পড়েছে ভারতের টেক্সটাইল খাত। বাড়তি খরচ দেশটির টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বড় সমস্যা। যেমন—বাংলাদেশের তুলনায় ভারতে বিদ্যুত্সংক্রান্ত খরচ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি।
প্রধান আমদানিকারকদের সঙ্গে ভারতের মুক্ত অথবা অগ্রাধিকার বাণিজ্যচুক্তির অভাব রয়েছে। পোশাকের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং কাপড়ের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি না থাকা ভারতীয় রপ্তানিকারকদের ওপর বাড়তি দামের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে।
ভারতে উচ্চ মূলধন ব্যয় এবং প্রায় সব টেক্সটাইল যন্ত্রপাতির আমদানিনির্ভরতা সন্তোষজনক মুনাফা অর্জনকে কঠিন করে তুলেছে। চীনা প্রস্তুতকারকের তুলনায় উৎপাদনে বাড়তি সময় নেওয়া ভারতকে প্রতিযোগিতার দৌড়ে পিছিয়ে দিচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনামূলক নিকটবর্তী উৎপাদনকেন্দ্রে বিনিয়োগের প্রবণতাও ভারতীয় টেক্সটাইল শিল্পের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে ভারতের টেক্সটাইল খাতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৮-৯ শতাংশ হওয়া উচিত। সেটি হলে ২০২৬ সাল নাগাদ টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি সাড়ে ছয় হাজার কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছাতে পারে। ভারতের টেক্সটাইল মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য আরো বড়। তারা আগামী পাঁচ বছরে দেশটির টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি ১০ হাজার কোটি ডলারে নিতে চায়।
এ অবস্থায় ভারতের নতুন কৌশল হচ্ছে পোশাকে ‘চায়না প্লাস ওয়ান’ ধারণা কাজে লাগিয়ে এ খাতে এক হাজার ৬০০ কোটি ডলার আয় বাড়াতে হবে। কাপড়ে আঞ্চলিক ‘ফ্যাব্রিক হাব’ হিসেবে অবস্থান তৈরি করে ভারতকে এ খাতে ৪০০ কোটি ডলার আয় বাড়াতে হবে। আর এই কার্যক্রম শুরু হতে পারে কটন ওভেন থেকে। হোম টেক্সটাইলে বিশ্বব্যাপী গ্রাহক বেইস প্রসারিত করে এ খাতে ৪০০ কোটি ডলার আয় বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। এর পাশাপাশি কৃত্রিম সুতায় তৈরি পণ্যগুলোতে নজর দিয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি ডলার আয় বাড়াতে হবে। কারিগরি টেক্সটাইলেও সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ চাহিদার ভিত্তিতে সক্ষমতা তৈরি করে ২০০ কোটি ডলার আয় বাড়াতে হবে।