মালদ্বীপের নাগরিকদের চীনে যেতে ভিসার প্রয়োজন হবে না
ভিসা ছাড়াই চীনে গিয়ে ৩০ দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবে মালদ্বীপের মানুষ
কভিড মহামারির পর মালদ্বীপের নাগরিকদের চীনে যেতে ভিসার প্রয়োজন হবে না। গতকাল শনিবার দেশ দুটির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় তারা ভিসা ছাড়াই চীনে গিয়ে ৩০ দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবে।
মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহীদ এবং চীনের স্টেট কাউন্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর উপস্থিতিতে ভিসা অব্যাহতিসহ পাঁচটি চুক্তি ও সমঝোতা হয়। মালদ্বীপ ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যৌথভাবে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তীর বিশেষ লোগো উন্মোচন করেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ইরিত্রিয়া, কেনিয়া, কমোরোস, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা সফরের অংশ হিসেবে গত শুক্রবার মালেতে পৌঁছান। তিনি এমন একসময় মালদ্বীপ সফর করেছেন যখন মালদ্বীপে ভারতীয় সামরিক উপস্থিতির বিরুদ্ধে মহলবিশেষের প্রচারণা জোরালো হয়েছে। এ ছাড়া এই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের পটভূমিতে মালদ্বীপে এই সফরকে বিশ্লেষকরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন।
মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে চীনের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি ছাড়া আরো চারটি চুক্তি, সমঝোতা ও দলিল সইয়ের কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা চুক্তিতে সামাজিক, জীবন-জীবিকা ও অবকাঠামো প্রকল্পে মঞ্জুরি সহায়তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। চীন-মালদ্বীপ মৈত্রী সেতুর ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে সমীক্ষার জন্য একটি ‘লেটার অব এক্সচেঞ্জ’ স্বাক্ষরিত হয়েছে। মালের সঙ্গে হুলেমালে দ্বীপের সংযোগকারী ১.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সেতু চীনের ২০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যমানের সহায়তায় নির্মাণ করা হয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের আমলে।
প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনকে চীন-ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখা হয়। আর ওই সেতু মালদ্বীপে চীনের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প। অতীতে বিভিন্ন সময় নেওয়া ঋণ বাবদ মালদ্বীপের কাছে চীনের পাওনা প্রায় ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার। মালদ্বীপের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সলিহর সরকার চীনের ওই ঋণ পুনর্বিন্যাস করতে চায়।
মালদ্বীপের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে মালদ্বীপ চীনা অর্থায়নে সামুদ্রিক পানির লবণাক্ততা দূর করার প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্পূরক কার্যাদেশও স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ ছাড়া মালদ্বীপ ও চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা খাতে সহযোগিতা বিষয়েও একটি চুক্তি হয়েছে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট সলিহর সরকার এখন পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রকাশ্যেই ‘ভারত প্রথম’ অনুসরণ করার কথা বলছে। সলিহর সরকার ২০১৮ সালে মালদ্বীপে ক্ষমতায় আসার পর ওই দ্বীপরাষ্ট্রটির উন্নয়নে ভারত ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।