দুই মাসের অবরোধ শেষে আজ থেকে আবার শুরু হচ্ছে সুন্দরবনে মৎস্য ও কাঁকড়া আহরণ। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ। বনে যাওয়ার অপেক্ষায় বাগেরহাটের শরণখোলার পাঁচ হাজারের বেশি জেলে। বন অফিস থেকে পাস পারমিট নিয়ে রওনা হবেন তাঁরা। সুন্দরবনের মাছ, কাঁকড়া ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর প্রজননের জন্য ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সব ধরনের বনজসম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করেছিল বন বিভাগ।
বন বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এবার মৎস্য আহরণে বেঁধে দেওয়া কঠোর নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে জেলেদের। জাল পাতার জন্য বাঁশ, কচা, রান্নার জ্বালানি কাঠ, নৌকার ছাউনি—সব কিছুই নিয়ে যেতে হবে বাড়ি থেকে। ১৮টি অভয়ারণ্য এলাকা এবং ২৫ ফুটের কম প্রশস্ত খালে কোনো জেলে বা মাছ ধরা নৌকা প্রবেশ করতে পারবে না। এক ইঞ্চির ছোট ফাঁসের কোনো জাল ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ এলাকার বাইরে জেলেরা চরপাটা জাল পেতে ও বড়শি দিয়ে মাছ এবং চাঁই পেতে কাঁকড়া আহরণ করতে পারবেন। কেউ বিষ দিয়ে মাছ শিকার বা বিধি-নিষেধ অমান্য করলে তাঁর বিএলসি বাতিল, বন আইনে জেল-জরিমানা এবং স্থায়ীভাবে তাঁকে বনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। এদিকে দুই মাসের এই অবরোধে চরম দুর্দিন গেছে দরিদ্র জেলেদের। মৎস্য আড়তদার এবং ব্যবসায়ীদেরও লোকসান গুনতে হয়েছে লাখ লাখ টাকা। অবরোধ খুলে দেওয়ার পর সুদ এবং ধারদেনা করে নৌকা ও জেলেদের পেছনে বিনিয়োগ করতে হচ্ছে নতুন করে।
খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলে হারুন মোল্লা জানান, তাঁর সংসারের সদস্য সাতজন। সুন্দরবনে এক দিন না গেলে তাঁর ঘরে চুলা জ্বলে না। দুই মাসের অবরোধে দিনমজুরি করে কোনোমতে এত মানুষের পেট চালিয়েছেন। মহাজনের কাছ থেকেও ধার নিয়ে দেনাগ্রস্ত হয়েছেন। পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘কঠোর বিধি-নিষেধ পালনের শর্তে এবার জেলেদের পাস-পারমিট দেওয়া হবে।’