অনলাইন ক্যাসিনোর মাধ্যমে অর্থপাচারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, এভাবে দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এখন ভয় হলো এরা দেশকে অর্থশূণ্য করে ফেলে কি না?
অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালনায় জড়িত চক্রের সদস্য শাকিল খানের জামিন আবেদনে বিষয়ে শুনানিকালে নিজের উদ্বেগ জানিয়ে এ মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। আদালত শাকিল খানকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন। আদালতে শাকিল খানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও গোলাম আব্বাস চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, এই আসামি অনলাইন ক্যাসিনোর মাধ্যমে দেশের অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত। হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছে। তার জামিন স্থগিতের আবেদন জানাচ্ছি।
এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, এই আসামি অ্যাপস তৈরি করে। সে ফ্রিল্যান্সার। অ্যাপস তৈরি করে বিক্রি করে। আইনে এর অনুমোদন আছে।
এসময় বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, ভাল কথা, আইনে অনুমোদন আছে। কিন্তু আপনি এরকম বাজে অ্যাপস, খারাপ অ্যাপস বানাবেন কেন? ভালো অ্যাপস বানাতে পারেন না?
জবাবে আইনজীবী বলেন, গ্রাহকরা যেভাবে চাহিদা দেয় সেভাবেই তৈরি করা হয়। আইনেতো এটা বানানোর ক্ষেত্রে বাধা নেই।
এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, এটাতো মারাত্মক অভিযোগ। এভাবে দেশের টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে।
জবাবে আইনজীবী বলেন, এর মামলায় সর্বোচ্চ সাজা ৫ বছর। এই আসামি এক বছরের বেশি কারাগারে।
এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, এ মামলায় সাজা বাড়ানো উচিত। এরপর আদালত জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন।
গতবছর ২৭ জুলাই রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালনায় জড়িত চক্রের সদস্য শাকিল খান (২২) ও যুবাইদ হাসান রচিকে (৩২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, ৮টি মোবাইল ফোন, ২১টি সিম কার্ড ও ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আসামিরা প্রতারণামূলক অ্যাৎেপস-এর মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া ব্যবসা পরিচালনা করে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। তারা ফেসবুক পেজ এবং বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের বিকাশ ও নগদ এজেন্ট নম্বর প্রদান করে ওইসব নম্বরের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেছে। চক্রটি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ওই টাকা ই-ওয়ালেট মাধ্যমে ক্যাসিনো প্ল্যাটফমের মূল হোতা আরতাম ও শাখাওয়াত হোসেন শাওনের কাছে পাচার করেছে। কয়েক কোটি টাকা পাঠিয়েছে। নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।