গত ১৭ই সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) মিশরের কায়রোতে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশী মেধাবী শিক্ষার্থী আবু আদনান মুহাম্মাদ মহিবুর রহমানের এমফিল থিসিস ডিসকাশন সেমিনার।
আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সাইন্স অনুষদের অধীনে গবেষক আবু আদনান মহিবুর রহমানের লিখিত এমফিল থিসিসের আলোচ্য বিষয় ছিল “শাইখ আবুল ফিদা ইসমাইল হাক্কি আল-ইস্তাম্বুলি রচিত তাফসিরে রুহুল বয়ানের সুরা লুকমানের শুরু থেকে নিয়ে সুরা আহযাবের ৫৩ নং আয়াত পর্যন্ত তাফসিরে বর্ণিত হাদিস ও আসারসমূহ; জমা, তাখরিজ ও দিরাসা”।
অনুষদটির ইমাম আহমাদ আত-তাইয়িব হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে অভ্যন্তরীণ সুপারভাইজার (মুনাকিশ দাখিলি) হিসেবে অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. খালিদ শাকির আতিয়াহ। তিনি উসুলুদ দীন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ও ইসলামিক সাইন্স অনুষদের হাদিস বিষয়ক অধ্যাপক। বহিরাগত সুপারভাইজার (মুনাকিশ খারিজি) হিসেবে উপস্থিত হন ইসলামিক থিওলোজি অনুষদ, কায়রোর হাদিস বিভাগের অধ্যাপক ড. হিশাম ইবরাহিম ফারজ।
মূল সুপারভাইজার (মুশরিফ) হিসেবে উপস্থিত থাকেন ড. আব্দুল হামিদ মুহাম্মাদ আহমাদ। তিনি ইসলামিক থিওলোজি এন্ড দাওয়াহ অনুষদ (জাকাজিক) এর হাদিস বিভাগের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক। শাইখুল আযহারের বিদেশি শিক্ষার্থীবিষয়ক উপদেষ্টা ও মারকাজুত তাতবিরের প্রধান উস্তাজা নাহলা সয়িদির আগমন থিসিস ডিসকাশন সেমিনারকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে।
গবেষক আবু আদনান মহিবুর রহমানের এমফিল থিসিস ডিসকাশন সেমিনারে বাংলাদেশ দূতাবাস মিশরের মাননীয় রাষ্ট্রদূতের আগমন সেমিনারকে এক অনন্য বৈচিত্র্য এনে দেয়। শত শত বাংলাদেশী ও বিদেশী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত এই পুরো আয়োজনটিতে গবেষক আবু আদনান মহিবুর রহমানের পাশে থাকে আল-আযহারের কওমি ও সমমনা শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘আযহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ, মিশর’।
ডিসকাশন শেষে সম্মানিত সুপারভাইজারগণ গবেষক আবু আদনান মহিবুর রহমানকে সর্বোচ্চ ফলাফল মুমতাজ (এক্সিলেন্ট) প্রদানের মাধ্যমে উত্তীর্ণ ঘোষণা করেন। এসময় উপস্থিত সুপারভাইজারগণ, মাননীয় রাষ্ট্রদূত ম্যাডাম ও আযহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ মিশরের সভাপতি আব্দুল আজিজসহ উপস্থিত শিক্ষার্থীবৃন্দ গবেষককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
উল্লেখ্য যে, গবেষক আবু আদনান মহিবুর রহমানের জন্ম ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে। তার পিতার নাম জনাব আবদুল আজিজ ওরফে ময়না মিয়া। তার দেশের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার শিবগঞ্জ বাজারে। তিনি ২০০০ সালে বাংলাদেশের দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০০১ সালে হাদিস ও ২০০২ সালে তাফসির অধ্যায়ন করে ২০০৩ সালে মিশরে আগমন করেন।
মিশরে আল-আযহার থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করার সাথে সাথে তিনি কায়রো ইউনিভার্সিটি থেকে হাদিস নিয়ে ডিপ্লোমা করেন এবং আমেরিকান ওপেন ইউনিভার্সিটি ইজিপ্ট থেকে ইসলামিক স্টাডিজ নিয়ে ডিপ্লোমা করেন।
মিশরের একজন সিনিয়র শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি মিশরস্থ শিক্ষার্থীদের সংগঠন বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন, মিশর ও আযহার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বাংলাদেশ, মিশর এর উপদেষ্টা পদে দায়িত্বরত আছেন। এছাড়াও তিনি দীন ও কুরআন শিক্ষা কেন্দ্রিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন।