মানুষ আমারে ভালোবাসুক।

মানুষের এই বাসনা ঐতিহাসিক এবং কোনো খারাপ জিনিস না আসলে। বাট ইট ওয়ার্কস ইন রিয়াল লাইফ – যেইখানে আপনি ফিজিকালি আছেন এবং বড়জোর ৫/৬ শ মানুষকে ইমপ্রেস করতে চান। রিয়াল লাইফে মানুষরে আপনাকে ভালোবাসাইতে চাইলে আপনার আসলে কিছু ভালো কাজ করতে হবে – ভণ্ডামি কইরে হলেও। এবং আপনার ভালোবাসাইতে-চাওয়া-কর্মকাণ্ডের ফলাফল কী আপনি কোনোভাবেই তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারবেন না।
 
কিন্তু এই বাসনা স্কেলেবল না। মানে এই সেইম বাসনা যখন আপনি ২ কোটি মানুষের মইধ্যে ফলাইতে যাইবেন আপনি এক বিকারের মইধ্যে পতিত হইবেন। ইট সিম্পলি ডাজন্ট ওয়ার্ক।
 
সোশাল মিডিয়ায় এই বিকার এমন পর্যায়ে যায় যে এক পর্যায়ে আপনি আর মানুষ থাকেন না – এমন কিছু হন যেইটারে সংজ্ঞায় ফেলান যায় না।
 
আপনি যদি নবীও হন – এক লগে ২ কোটি মানুষরে আপনারে পছন্দ করাইতে পারবেন না। ধরেন যে আপনি শচীন টেন্ডুলকার – আপনার ক্রিকেট খেলাটারে ৫০ কোটি লোক পছন্দ করবে; আপনি ডুয়া লিপা – আপনার গান ৫০ কোটি লোক ভালোবাসবে; কিংবা আপনি কিম কার্ডেশিয়ান – ১০০ কোটি লোক আপনার পিছনটা পছন্দ করবে।
এতোটুকুই।
 
এরা কিন্তু গোটা মানুষটারে পছন্দ করে না। বাট সোশাল মিডিয়ার চক্করে পড়লে আপ্নেরে মনে করানো হইবে যে ১০০ কোটি লোক পছন্দ করা বুঝি খুব ভালো জিনিস – এট লীস্ট ডিজায়ারেবল।
 
তখন আপনি ১ মিলিয়ন বা ১০০ মিলিয়ন – এই সংখ্যার কয়েদী হবেন। আপনাকে ২ কোটি মানুষের ডিজায়ারের চাকর হইতে হবে। এইটার থিকা ছুটকারা নাই। আপনাকে স্কিন দেখতে হবে – কিংবা ক্লিভেজ – পানিতে ভিজতে হবে না চাইলেও। কারণ আপনি তো ডিজায়ার পয়দা করার খেলায় নামছেন। ধরেন যে আপনি একটা রিভীলিং ছবি মানুষকে দেখাইতে চান। সেই বাসনারে জাস্টিফাই করার জন্য একটা দার্শনিক মন্তব্য করবেন যেইটা আসলে কী আপনি নিজেই বোঝেন না। আপনি পানিতে নামছেন বক্সারের উপর সিক্স প্যাক কিংবা গলার নীচে টু প্যাক দেখাইতে কিন্ত আপনি বলবেন – “প্রকৃতির কাছে ফিরে ফিরে যাই বলেই তো জীবন এতো সুন্দর”। ওয়াট ডাজ ইট মীন?
 
দুই কোটি মানুষ – যেই দেশেরই হোক – সেন্ট্রাল টেন্ডেন্সী হবে ভক্সদ হওয়া। এই ভক্সদদের মনোরঞ্জন (সেক্সচুয়াল সেন্সে না) করতে হলে আপনারে সব সময় তাল দিতে হবে – ডগমার সাথে। আপনি ধীরে ধীরে পিওর বোকাচোদা হয়ে উঠবেন। না হলেও আপনারে বোকা*** ভান করতে হবে – এনডিয়ারিং বোকা**। প্রচুর ভার্চু সিগনালিং করতে হবে।
 
মানুষ আমারে ভালোবাসুক – এই বাসনা ভার্চুয়াল লাইফে আনলে আপনেরে এমনভাবে ডিহিউম্যানাইজ করা হবে যেইটা সহ্য করার ক্ষমতা ৯৯% মানুষের নাই – এবং যে এই খেলায় নামতেছে সেও খেলায় নামার আগে জানতো না যে তার নাই।
 
আপনি বিপদে পড়বেন – আপনাকে নিয়ে মানুষ হাসবে। আপনি মারা যাবেন – মানুষ খুশী হবে। মানুষ হওয়ার যে বেয়ার মিনিমাম থ্রেশহোল্ড সেইটা আপনি খোয়ায় ফেলবেন – কারণ আপনি পাবলিক প্রপার্টি।
 
সবচাইতে ট্র্যাজিক বিষয়টা হোলো আপ্নে অথেনটিসিটি হারায় ফেলবেন। যেই মানুষের মন থিকা অথেন্টিসিটি হারায় যায় – তার মনে আর কোনোদিন হিউমিলিটি বাসা গাড়তে পারে না। আপনি কোনোদিন গ্রাউন্ডেড হইতে পারেন না। এইটা এক বিপর্যয়কর অবস্থা – সাইকোলজিকালি – যেকোনো মানুষের জন্য।
 
মানুষের মতামতের মূল্য দিয়া রাজনীতি আর ব্যবসা করা যায়। কাজের কাজ যা হৈছে পৃথিবীতে তার বেশীরভাগই হৈছে “চু**” বলতে পারায়।
 
যে জানে না যে সে কী জানে না – তার মতামতের চাইতে কার্যকর বিষ পৃথিবীতে কিছু নাই।
সূত্র
ফেইসবুক

অনলাইন ডেস্ক

সংবাদটি এবং সংযুক্ত মিডিয়া (ছবি-ভিডিও-গ্রাফ) বিভিন্ন দেশীয় অথবা আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা হতে সংগ্রহীত অথবা অনুবাদকৃত। এর কোন কৃতিত্ব অথবা কপিরাইট আমাদের নয়।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button