আন্তর্জাতিক ঢোল উৎসবে হাজারো দর্শকের মন জয়
কায়রোতে 'শান্তির জন্য ঢোল সংলাপ' সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ
পিড়ামিড আর নীলনদের দেশ মিশরে গত শুক্রবার (২জুন ২০২৩) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইসলামিক কায়রোতে বাংলাদেশ ও মিশরের মধ্যকার সাংস্কৃতিক চুক্তির আওতায়, ১০তম আন্তর্জাতিক ঢোল ও লোকশিল্প উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে লাখো ভিনদেশী সঙ্গীত পিপাসু দর্শকের মন জয় করলো প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি সংস্কৃতিক দল।
মিশরের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ‘শান্তির জন্য ঢোল সংলাপ’ শ্লোগান নিয়ে সপ্তাহব্যাপী এই বিশাল আয়োজনে মিশরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি সাংস্কৃতিক দল মুইয -ঈল স্ট্রিট এর উত্তর কায়রো ওয়াল থিয়েটারে উৎসবটির উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে ‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী…..’ গানটি পরিবেশনের সময় দর্শক সারিতে বসা হাজার হাজার ভিন দেশী দর্শক করতালি দিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ে। এসময় আরব আফ্রিকার অনেক টিভি চ্যানেল অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রচার করতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগ ও সার্বিক সহযোগিতায় উৎসবে অংশ নেয় মিশরে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মোট ৮ জন কন্ঠশিল্পী ও বাদক দল। বাংলাদেশ সংস্কৃতি দলের শিল্পীরা হলেন শিশির কুমার সরকার, ফারুক হোসেন, মোঃ ফেরদৌস, সোহেল, দেলোয়ার, প্রীতি সরকার, সানজিদা মুনা ও জান্নাত ইশা।
বাংলাদেশ, গ্রীস, মেক্সিকো, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ সুদান, আলজেরিয়া, ইয়েমেন , ফিলিস্তিন ও স্বাগতিক মিশর সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩০টির ও বেশি সাংস্কৃতিক দল অংশ নিয়েছিল উৎসবে।
মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, আন্তর্জাতিক ঢোল উৎসবে আমরা নিজেরাই অত্যন্ত উদ্যম, উদ্যোগ ও সাহসিকতার সমন্বয়ে এখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে এই উৎসবে যোগদান করেছি। তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বে সংঘাতের বিপরীতে সংলাপ, সহাবস্থান ও সহমর্মিতা প্রতিষ্ঠার জন্য এখানে শান্তির প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশ-মিশরের বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং কায়রো-ঢাকা বিনিময় ও সহযোগিতা গভীরতর হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ঢোল ও লোকশিল্প উৎসবটি দুই দেশের সংস্কৃতির অঙ্গনের দ্বার আরও উন্মুক্ত করবে।
উৎসবের প্রধান পরিচালক ডঃ ইনতেসার আবদেল-ফাত্তাহ বিমোহিত দর্শকদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে বাংলাদেশ দূতাবাসকে সাগ্রহে অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও অপেশাদার বাংলাদেশী শিল্পীদের পরিবেশনার উচ্ছসিত প্রশংসা করেন।
মিশরের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সংস্কৃতি ও শিল্প বিশেষজ্ঞ এবং খ্যাতিমান শিল্পী ইন্তেসার আবদেল ফাত্তাহ ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক ঢোল ও লোকশিল্প উৎসবের সূচনা করেছিলেন। তিনি মিশরীরের বিভিন্ন সংস্কৃতি ও শিল্প গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।