কায়রোর আন্তর্জাতিক বৃহত্তম বইমেলায় নেই কোন বাংলাদেশী বইয়ের স্টল

৫৩তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা ২০২২ শেষ হবে ৭ ফেব্রুয়ারী।

মানুষের ধূসর নিরানন্দ সমতল জীবনে প্রাণের প্রবাহ নামিয়ে আনে উৎসব। উৎসব আয়োজনে সে পথ ধরেই দেশে দেশে বিভিন্ন মেলা বিস্তৃত পরিসর দখল করে থাকে। মেলা প্রত্যেকটি দেশের সাংস্কৃতিক জীবনের অন্যতম অঙ্গ। আর মেলার জগতের মিলনপেয়াসি সভ্যতার কনিষ্ঠ সন্তান হল “বইমেলা”।

এখানে ঘটে সভ্যতার প্রাণের চিহ্ন বিভিন্ন বইয়ের সমাহার। যেখানে দেশী বিদেশী কোন বই-ই বাদ যায় না তাইতো কবির কণ্ঠে ধ্বনিত হয়: “হেথায় মিশেছে দিশি দিশি হতে, বিপুল জ্ঞানের ধারা, শত মনীষীর চিন্তার বাণী আনন্দে আকুল পারা।”

২৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ৫৩তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা। ৮০ হাজার স্কয়ারফিটের বিশাল মেলাপ্রাংগনে অংশ নিচ্ছে ৫১টি দেশের ১০৬৩ টি প্রকাশনী। স্টলসংখ্যা ৮৭৯টি। কায়রোর বৃহত্তম বই মেলায় অংশ নিয়েছে পৃথিবীর প্রায় 51 টির মধ্যে দেশ যেখানে ইন্ডিয়া পাকিস্তান এবং নেপালের মতো দেশগুলো স্টল বরাদ্দ পেলেও দুর্ভাগ্যের বিষয় হলেও আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য কোন স্টল বরাদ্দ নেয়া হয়নি। যা মিশরে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশী এবং ছাত্রদেরকে অনেক মর্মাহত করেছে।

১৯৬৯ সালে শুরু হওয়া এই বই মেলাটিকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিসি সরকার অনেক আধুনিকায়ন করেছে। এই মেলাটির জন্য বর্তমানে কায়রো শহরের একটি মনমুগ্ধকর আবাসিক এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে, যার নাম তোগাম্মা’ আল খামিস এ অবস্থিত ইজিপ্ট ইন্টারন্যাশনাল এক্সিবিশন সেন্টার।

কায়রো শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে বই মেলায় যোগদানের জন্য মিশরের পরিবহন মন্ত্রণালয় নির্দিষ্ট বাস সার্ভিস চালু করেছে। পুরো বইমেলাটিকে তিন স্তরের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে ঢেকে ফেলা হয় যা জনগণের নিরাপত্তা বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান মেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীগণ।

এই মেলা দেখার জন্য এবং পছন্দের লেখকের বই কেনার জন্য প্রতিদিনই ভিড় করছে প্রায় হাজারো দর্শনার্থী থেমে নেই বাংলাদেশি প্রবাসী এবং ছাত্র-ছাত্রীরাও। বইমেলা মূলত আবাল-বৃদ্ধ সকলেরই মিলনমেলা। এর প্রভাবে সৃষ্টি হয় মানুষের প্রতি পূর্ণ বন্ধন। মুছে যায় সামাজিক ভেদরুদ্ধীর ফলে সৃষ্ট ব্যাবধান। বিখ্যাত লেখকদের বিক্রিত বই এর স্বাক্ষর, খ্যাতিমান কবির স্বরচিত কবিতা আবৃতি স্বাভাবিকভাবে দর্শক এবং পাঠকদের দারুণভাবে প্রভাবিত করে। দর্শক এবং পাঠক আবিস্কার করেন তার নিরব সঙ্গী বইকে। বইমেলা মানুষের চিন্তার পরিমাপক। এর মাধ্যমে মানুষের রুচি ও আদর্শের পরিবর্তন ঘটে।

কায়রো বই মেলার বৈশিষ্ট্য হলো এখানে একসাথে অনেক প্রকাশনী উপস্থিত হয়, প্রায় সকল শাস্ত্রের বইপত্র সুলভ মূল্যে এমনকি অনেক সময় ছাড়কৃত মূল্যেও পাওয়া যায়। কায়রো বইমেলা শেষ হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী।

মুহাম্মাদ কাউসার

ই'লামী ও শিক্ষার্থী আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অনুষদ

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button