স্কুল খুলতেই অনিয়ম, আজিমপুর গার্লস স্কুলের অধ্যক্ষ ও এক কর্মকর্তা বরখাস্ত
সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে নামলে পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম : প্রতিমন্ত্রী
আজ রবিবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শ্রেণিকক্ষে কার্যক্রম শুরু করার সার্বিক প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে এ বরখাস্তের নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে।
এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনই আজ সকাল ১০টা আজিমপুর গার্লস স্কুল ও কলেজ পরিদর্শনে যান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতি ও ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে কোনো অনিয়ম পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা আজকে এখানে এসেছি জানিয়ে। আমরা প্রায়শই জানিয়ে না জানিয়ে সব জায়গায় যাবো। কোথাও যদি কোনো নিয়মের ব্যত্যয় দেখি তাহলে সংশ্লিষ্ট যারা থাকবেন শিক্ষক কর্মকর্তা বা আমার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হোন তাদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার দিন শ্রেণিকক্ষে ময়লা পাওয়ায় আজিমপুর গার্লস স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। যিনি স্কুল পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসলে পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের কাছাকাছি চলে এসেছে। কিছুদিনের মধ্যে হয়তো ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। তখন শিক্ষা কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করতে পারব।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনে রাজধানীর কয়েকটি স্কুল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ দেড় বছর পর আজ থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। প্রথম অবস্থায় পঞ্চম শ্রেণি, এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন এবং অন্য শ্রেণিগুলোকে সপ্তাহে একদিন করে ক্লাসে নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির জন্য খুবই খুশির খবর দেড় বছর পর আজ আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি। দেশবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরাও খুশি। আমাদের দেশের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার নিম্নগামী, যা ৫ শতাংশের কাছাকাছি চলে এসেছে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, কিছুদিনের মধ্যে হয়তো ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। তখন আমারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসব এবং শিক্ষা কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করতে পারব।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই সচেতন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা শতভাগ সুরক্ষায় থাকবে। নিশ্চিন্তে আপনাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠান। তবে বাবা-মাকেও সন্তানের সুরক্ষার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে নিয়মিত মাস্ক (কাপড়ের) পরিধান করতে হবে, শ্রেণি কক্ষে প্রবেশের আগে প্রত্যেককে তাপমাত্রা পরীক্ষা ও সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। তা ছাড়া প্রতি বেঞ্চে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের বসতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। আরো বেশি বেশি বিদ্যালয় ও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি তিনি নির্দেশ দেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে জনগণের মধ্যে লেখনীর মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তিনি উপস্থিত মিডিয়া প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সেগুনবাগিচা আইডিয়াল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।