Site icon World 24 News Network

শিক্ষাব্যবস্থায় মাতৃভাষা ব্যবহারের গুরুত্ব (৫)

সব নবিকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করা হয়েছে।

ব্যাপকভাবে ইসলামের চর্চা হয় বক্তৃতার মাধ্যমে। সাপ্তাহিক জুমার নামাজে খুতবা প্রদান বাধ্যতামূলক এবং সেটি অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে শ্রবণ করতে হয়। কেউ কথা বললে ‘ভাই, চুপ করো’- তাও বলা যায় না। ইসলামের আলোকে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা এবং দ্বীনের ব্যাপক প্রচারের ক্ষেত্রে এই খুতবার অবদান অনস্বীকার্য। দুর্ভাগ্য, আমরা এর থেকে পুরোপুরি ফায়দা লাভ করতে সক্ষম হচ্ছি না। মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণ ও সমাজ পরিবর্তনে বক্তৃতার যাদুকরী প্রভাব রয়েছে।

জুমার দিনে বক্তৃতা শ্রবণকে আল্লাহর রসুল সা. আবশ্যক করেছেন। এটি শুধু বক্তৃতা নয়, ইবাদত এবং অত্যন্ত মনোযোগের সাথে শুনতে হয়। জুমার দিন প্রস্তুতিসহ সকাল সকাল মসজিদে উপস্থিত হওয়ার তাগিদ রয়েছে এবং যে প্রথমে উপস্থিত হবে তার আমলনামায় উট, পরবর্তীতে গরু, ছাগল ও মুরগি কুরবানির সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। খতিব মহোদয় যখন মিম্বরে আরোহণ করেন তখন ফেরেশতারা সওয়াব লেখা বন্ধ করে খুতবা শ্রবণ শুরু করে। এতে উপলব্ধি করা যায়, ইমাম সাহেবের খুতবা শুরুর পরে উপস্থিত মুসল্লিরা জুমার সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়।

আমাদের দেশের ব্যবস্থাপনায় আরবিতে খুতবা দেয়া হয় যা শুধু অযৌক্তিকই নয় বরং আল্লাহর বাণী ‘আমি সব নবিকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে’- এর নির্দেশনার পরিপন্থী। খুতবা বা বক্তৃতা মানুষের বোধগম্য ভাষাতেই হওয়া বাঞ্চণীয়। দুর্ভাগ্য, মানুষ আরবি বুঝে না বিধায় খুতবা আমাদের দেশে তিনটি হয় যা সুস্পষ্ট বিদয়াত এবং আলোচনা চলার সময় বলা হয় পরে চার রাকাত সুন্নাত পড়ার সময় দেয়া হবে, এ কথা বলাতে খুবই স্বল্প সংখ্যক মানুষ বক্তৃতা শুনে থাকে এবং খতিব মহোদয়ের বাংলায় ওয়াজ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।

দুটি খুতবা সুন্নাহ সমর্থিত এবং প্রথম খুতবা মাতৃভাষায় হলে এর হক আদায় হওয়া সম্ভব। ড. আব্দুল্লাহ বিন বাজের মতো জগত বিখ্যাত ফকিহ মানুষের বোধগম্য নয় এমন ভাষায় খুতবা প্রদানকে নাজায়েজ বলেছেন এবং সউদী আরবের বরেণ্য মুফতি শাইখ ইবনে উসাইমিন রহ.-কে মাতৃভাষায় খুতবা প্রদান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে জায়েজ বলে মন্তব্য করেন এবং স্পষ্টভাবে বলেন, খতিবকে নিজ ভাষায় খুতবা দিতে হবে (ফাতওয়া আরকানিল ইসলাম)।

চলবে…

Exit mobile version