মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে ইসলামের বক্তব্য স্পষ্ট। আল্লাহর বাণী, ‘পরম দয়ালু (আল্লাহ)। এ কুরআনের শিক্ষা দিয়েছেন। তিনিই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং কথা (ভাষা) শিখিয়েছেন’- সুরা আর রহমান।
ভাষা আল্লাহ তায়ালার দান এবং এই বাকশক্তি (ভাষা) মানুষকে সকল সৃষ্টি থেকে পৃথক ও সবার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছে। এই ভাষার মাধ্যমে মানুষকে জ্ঞান অর্জন করতে হয় এবং তার যোগ্যতার বিকাশ ঘটে। অন্যান্য সৃষ্টি জন্মগতভাবে লব্ধ শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করে- যেমন মাছ পানিতে সাঁতার কাটে, পাখি আকাশে উড়ে এবং আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ কাজ করে। মানুষ ছাড়া অন্যান্য সৃষ্টির আলাদা কোনো শিক্ষক নেই এবং নেই কোনো শিক্ষাদান পদ্ধতি।
সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে মানুষকে পৃথকভাবে শিক্ষা দিতে হয়েছে। আল্লাহপাক নিজে আদম আ.-কে তাঁর সকল সৃষ্টির নাম ও তার কার্যক্রম শিখিয়েছেন।
অন্যান্য সৃষ্টি থেকে মানুষের পার্থক্য হলো তার ভাষা। সকল সৃষ্টি জন্মগতভাবে জানলেও ভাষাজ্ঞানের কারণে মানুষকে পৃথকভাবে জানতে হয়। এই জানার হাজারো প্রক্রিয়া রয়েছে। বক্তৃতা বা আলোচনা শুনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে, বই পড়ে এবং অনলাইনভিত্তিক নানা প্রক্রিয়ায়। এই জানার ক্ষেত্রে মাতৃভাষা যতখানি সহায়ক, অন্য কোনো ভাষায় সেটি সম্ভব নয়। আদম আ. ছিলেন প্রথম মানুষ ও নবি। মানুষের হেদায়াতের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবি ও রসুল আল্লাহ পাঠিয়েছেন এবং তাঁদেরকে স্বজাতির ভাষাভাষী করা হয়েছে ও কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরই ভাষায়।
আল্লাহপাকের বাণী, ‘আমি সব নবিকেই তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে’- সুরা ইব্রাহিম ৪। মুহাম্মদ সা. একজন আরবিভাষী বলেই তাঁর উপর অবতীর্ণ কিতাব ‘আল কুরআন’ আরবি ভাষায় অবতীর্ণ।
চলবে…