ধৈর্যশীলরাই সফল হন
বিশ্বাসী বান্দারা সর্বাবস্থায় পরম ধৈর্যাবলম্বন করে।
পৃথিবীটা বড় সংঘাতময়। নিরবচ্ছিন্ন সুখ বা দুঃখ বলে কিছু নেই। পৃথিবীর বয়স ঠিক কতো বা আরো কতো দিন টিকবে তা আমরা জানি না। তবে আমরা বিশ্বাসীরা জানি যে, একদিন এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে এবং এরপরে যে জীবন তা স্থায়ী, যার শেষ নেই।
এই পৃথিবীতে ব্যক্তি হিসেবে আমাদের অবস্থান খুবই সংক্ষিপ্ত এবং আখিরাতের বিবেচনায় তা কোনভাবেই তুলনীয় নয়। বুদ্ধিমান তারাই যারা আখিরাতকে ধ্বংস না করে এ দুনিয়ার জীবনটা পরিচালনা করে। যদিও আখিরাতকে প্রাধান্য দিতে হবে তবে দুনিয়াটাকে উপেক্ষা করার মতো নয়।
এ পৃথিবী একটি শষ্যক্ষেত। এখান থেকেই অর্জন করে নিতে হয়। নিজেকে দুনিয়ায় একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য চেষ্টা-প্রচেষ্টায় ত্রুটি করার কোনো সুযোগ নেই। এটাও ইবাদত।
ইসলামে দ্বীনদারী ও দুনিয়াদারী বলে কিছু নেই। নামাজ-রোজার মতো ইবাদতও যদি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা উদ্দেশ্য না হয়, তাহলে তা দুনিয়াদারী। লেখাপড়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি সবই দ্বীনদারী যদি সেখানে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর হুকুম মেনে চলা হয়। নিজের পরিবার, আত্মীয়- স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখাটাও ইবাদত, কারণ সম্পর্ক বজায় রাখা আল্লাহরই নির্দেশ।
পৃথিবীটা বড় বিচিত্র। দেখা যায় যাদেরকে আপন ভাবা হয়, তাদের কাছ থেকে সব সময় সদাচরণ পাওয়া যায় না। এ সব ক্ষেত্রে ধৈর্যাবলম্বের কোনো বিকল্প নেই।
আল্লাহপাক সুধারণা পোষণের নির্দেশ প্রদান করেছেন। অহেতুক সন্দেহ-সংশয় পোষণ এবং অপরের ত্রুটি-বিচ্যুতি উপেক্ষা করার মতো হৃদয়াবৃত্তির অভাবে অনেক সময় সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ সব ব্যাপারে আল্লাহতায়ালার বক্তব্য- ‘যে স্বীয় মনের সংকীর্ণতা থেকে নিজেকে রক্ষা করলো সেই প্রকৃত কল্যাণ লাভ করলো’।
আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের মধ্যে উদারতা- প্রশস্ততা দেখতে চান। এই উদারতা-প্রশস্ততার অধিকারী তারাই হতে পারে যারা মানুষের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করতে পারে এবং কেউ সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলেও যারা সম্পর্ক জুড়ে দিতে পারে। এমন গুণ তারাই লাভ করতে পারে যারা অতীবও ধৈর্যশীল এবং তারাই সাফল্য লাভ করে। আল্লাহর নিজের কথা- ‘আল্লাহ নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন’। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী বান্দারা সর্বাবস্থায় পরম ধৈর্যাবলম্বন করে।
পরোয়ারদেগার ! তুমি আমাদেরকে তোমার ধৈর্যশীল বান্দা হিসেবে কবুল করে নাও। আমিন।