প্রযুক্তির বিস্ময়কর উন্নয়নের পরও বলা যায় দ্বীনের চর্চা ও নসিয়তের ক্ষেত্রে বক্তৃতার অবদান সর্বাগ্যে। জুমার খুতবা, তাফসিরুল কুরআন ও ওয়াজ মাহফিলে বরেণ্য আলেমদের ওয়াজ শোনার জন্য মানুষ উদগ্রীব থাকে এবং সেসব ওয়াজ মাহফিলের আলোচনা ইউটিউবে মানুষ মনোযোগ সহকারে শুনে।
নসিহতের ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থানে রয়েছে জুমার খুতবা। রসুলুল্লাহ সা.-এর পন্থা অনুসরণ করে যদি জুমার খুতবা প্রদান করা যায় তবে উদ্বুদ্ধকরণ ও সমাজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যুগান্তকর ভূমিকা রাখতে পারে। এখানে বলা যায়, খতিব মহোদয় মিম্বরে আরোহণের পূর্বে সব মুসল্লি মসজিদে উপস্থিত হয়ে যাবে এবং ইমাম সাহেব সমসাময়িক বিষয়ে মাতৃভাষায় খুতবা প্রদান করবে যাতে মহান আল্লাহর অভিপ্রায় ‘যাতে তাদেরকে পরিষ্কার বোঝাতে পারে’- বাস্তবায়ন হয়। খতিব মহোদয়ের খুতবা ও ফরজ নামাজের মাঝে আর কোনো নামাজ থাকবে না।
ঢাকা শহরে অনেক মসজিদে খুতবা এবং ফরজ নামাজের মধ্যে কোনো নফল নামাজের সুযোগ দেয়া হয় না। আমাদের বিশ্বাস, বছরে ৫২টি সপ্তাহে খতিব মহোদয় পরিকল্পিতভাবে তাঁর মুসল্লিদের সম্মুখে দ্বীনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করতে পারলে ইনশা-আল্লাহ নসিহতের হক আদায় সম্ভব।
মানুষকে দাওয়াত দিতে হবে এবং সেটি কোন্ প্রক্রিয়ায় আল্লাহ তা উল্লেখ করেননি। এব্যাপারে গাইডলাইন হলো দাওয়াত দিতে হবে হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা। আল্লাহর বাণী, ‘তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহবান করো হিকমাত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে তর্ক করবে উত্তম পন্থায়’- সুরা নাহল ১২৫।
যতো প্রকার প্রক্রিয়া রয়েছে এবং ভবিষ্যতে উদ্ভাবন হবে সবই বৈধ পন্থা। ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক দাওয়াত, বক্তৃতা-বিবৃতি, জুমা ও ঈদের খুতবাসহ সবধরনের আলোচনা, বই-পুস্তক ও পত্র-পত্রিকায় লেখনি, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসএ্যাপ, ইউটিউব যতো রকমের উপায় আছে সবই গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ জনগণের বোধগম্যের লক্ষ্যে তাদের ভাষায় অর্থাৎ মাতৃভাষায় দ্বীনের চর্চা করতে হবে।
মাতৃভাষা অর্থাৎ বাংলা ভাষায় আমরা যতো পারদর্শী হবো ততো বেশি দ্বীনকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবো।
(চলবে)