আমরা যদি পেছন ফিরে দেখি তাহলে উপলব্ধি করবো, শিক্ষার প্রধান মাধ্যম ছিল বক্তৃতা এবং পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা। আমাদের শেখার ও জানার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আল্লাহর পক্ষ তাঁর বান্দাদের জন্য সর্বশেষ হেদায়াত আল কুরআন। এই মহাগ্রন্থ আল কুরআন সকল মুসলমানের ঘরে অবিকৃত অবস্থায় মজুদ রয়েছে। অথচ আরবি ভাষাভাষী মানুষের কাছে যখন কুরআন উপস্থাপন করা হয় তখন তার যাদুকরি সাহিত্যিক মান এবং বিষয়বস্তুর নির্ভুলতা ও কল্যাণকারিতা সহজেই মানুষকে মুগ্ধ করে। আরবরা তাদের ভাষায় নাজিলকৃত কুরআনের মর্ম উপলব্ধি করতেন বিধায় একদল সত্যানুসন্ধিৎসু মানুষ হেদায়াত লাভে ধন্য হয়েছেন।
পক্ষান্তরে দুনিয়াপূজারী ও পাপাচারী জনগোষ্ঠী কুরআনের মাঝে তাদের বিপদ উপলব্ধি করে প্রচণ্ড বিরোধীতা করে এবং এটিই স্বাভাবিক। আজও আমরা লক্ষ করি কুরআনের তাফসির মাহফিল যারা পণ্ড করে তারাই আবার নেতা-নেত্রীর মৃত্যুতে ঘটা করে কুরআনখানির ব্যবস্থা করে। অর্থ ও ব্যাখ্যা ছাড়া এই নির্জীব কুরআন খতম তাদের কোনো কল্যাণ-অকল্যাণের ক্ষমতা রাখে না। অধিকাংশ মুসলিম কুরআনকে বুঝতে চায় না এবং কুরআন থেকে হেদায়াত লাভের চেষ্টাও করে না। কুরআনের প্রতি এ এক বড় অবিচার। মুসলমানদের এ অবিচার দেখে বড়ই আক্ষেপ করে লিখেছিলেন ভারতের নবম রাষ্ট্রপতি ড. পণ্ডিত শঙ্কর দয়াল শর্মা নিম্নবর্ণিত কয়েকটি চরণ।
যা ছিল প্রাণ সঞ্চালনের গ্রন্থ হয়ে গেল প্রার্থনার পুস্তক
যা ছিল অধ্যয়নের জন্য হয়ে গেল আবৃত্তির জন্য
জীবন্তদের বিধান ছিল হয়ে গেল মৃতদের ছাড়পত্র
জ্ঞান-বিজ্ঞানের শাখা ছিল পড়ে গেল মুর্খদের হাতে
সৃষ্টি বশ করার আহবান ছিল থেমে গেল মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে
প্রাণহীনকে চেয়েছিল প্রাণবন্ত করতে লেগে গেল বিদেহীদের পরিত্রাণকল্পে
ওহে মুসলমান! একি তুমি করলে!! ওঠো, চোখ মেলো আর ভেবে দেখো।
আল্লাহপাক দয়া করে আমাদেরকে বাঙালি করে পাঠিয়েছেন। বাঙলা আমার মায়ের ভাষা। আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠতম উপহার এই ভাষা। এই ভাষায় শুদ্ধভাবে কথা বলা ও লেখা এবং এর মাধ্যমে গল্প, কবিতা, উপন্যাসে ইসলামকে ফুটিয়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব। এসবের মাধ্যমে ইসলামকে সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরা সম্ভব।