মিশরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
বাংলা ভাষার জন্য বাঙ্গালীদের আত্মত্যাগ আজ বিশ্ববাসীর কাছে স্বীকৃত
বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতার দেশ মিশরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রাজধানী কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস চত্বরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্যদিয়ে শুরু হয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের আনুষ্ঠানিকতা।
দূতাবাসে অস্থায়ী ভাবে নির্মিত শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম সহ প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তবে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল ৭টায়। মোহাম্মদ ফেরদৌসের উপস্থাপনায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আল- আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সৈয়দ আলাল উদ্দিন ও ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন ফাহিম আহমেদ। অতঃপর অমর ভাষা শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া ঢাকা থেকে পাঠানো ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ভাষা আন্দোলন’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
মূল অনুষ্ঠানে আলোচনার সুত্রপাত করেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ওমামা ওয়াসিফা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মিশরস্থ বাংলাদেশ স্টুডেন্টস্ অর্গানাইজেশন- এর সভাপতি, প্রবাসী বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী, দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, বাংলাদেশী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীবৃন্দ।
সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম মহান শহিদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস ও তাৎপর্যের উপর বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
ভাষা শহিদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি বলেন, বাংলা ভাষার জন্য বাঙ্গালীদের আত্মত্যাগ আজ বিশ্ববাসীর কাছে স্বীকৃত ও সম্মানিত হয়েছে। যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারী কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর প্রত্যেকটি মাতৃভাষাকে সম্মানিত করা হয়েছে। তিনি তাঁর বক্তৃতায় একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে একটি মর্যাদাশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে গড়ার কাজে প্রত্যেককে তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বাত্মক আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
অমর একুশ অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে বাংলাদশী ছাত্র-ছাত্রী, প্রবাসী নাগরিক, দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং শিশু-কিশোরগণ দেশাত্মবোধক গান, কবিতা, অভিনয় ও স্মৃতিচারণা উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে কায়রোর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বাংলাদেশী অধ্যাপক, শিক্ষার্থী, কর্মজীবী এবং বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।